রক্ত দেওয়া বা নেওয়ার সময় কেন কারও কারও শিরা খুঁজে পাওয়া যায় না

অসুস্থ হলে বিভিন্ন রকমের পরীক্ষার জন্য রক্ত দিতে হয়। আবার রক্ত দিতে গেলেও শরীর থেকে রক্ত নিতে হয়। সাধারণত এই রক্ত শরীরে বিদ্যমান বিভিন্ন শিরা বা ভেইন থেকে নেওয়া হয়। আবার ইনজেকশনের মাধ্যমে ওষুধ বা রক্ত দেওয়ার জন্য যে ক্যানুলা করা হয়, তা–ও শিরা বা ভেইনে করা হয়। কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে দেখা যায়, ভেইন বা শিরা বের করা যাচ্ছে না। অনেক পেশাদারকেও দেখা যায়, এমন ক্ষেত্রে রক্ত সংগ্রহ করতে হিমশিম খান।

অসুস্থ হলে বিভিন্ন রকমের পরীক্ষার জন্য রক্ত দিতে হয়
ছবি: পেক্সেলস

কারণ কী

ভেইনগুলো বাইরে থেকে দেখতে হালকা বেগুনি বা সবুজ রঙের। চামড়ার নিচে থাকে বলে এ রকম রঙে প্রকাশিত হয়। সাধারণত কিউবিটাল ভেইন, যেটি আমাদের বাহুর সম্মুখ অংশে থাকে, সেটি থেকেই রক্ত নেওয়া হয়। রক্তপ্রবাহের গতি ও রক্তচাপ বেশি হওয়ায় এই ভেইন থেকে রক্ত নেওয়া সুবিধাজনক। ভেইন না পাওয়ার কতগুলো কারণ আছে। এর মধ্যে অন্যতম, ভেইন–সংলগ্ন ত্বকে মাত্রাতিরিক্ত চর্বি। ভেইনের আকার–আকৃতিও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। অনেকের ভেইন সর্পিলাকার বা আঁকাবাঁকা হয়। অনেকের বংশগতভাবে এ রকম ভেইন থাকে। বয়স আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেইনের আকার ছোট হতে থাকে।

শরীরের ও বাহ্যিক তাপমাত্রা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। দেখা যায়, গরমে ভেইনগুলোর আকার কিছুটা স্ফীত হয়। অন্যদিকে শীতে ভেইনগুলো কিছুটা কুঁচকে যায় বা আকারে ছোট হয়ে যায়। এ রকম ঠান্ডা পরিস্থিতিতেও ভেইন পাওয়া কষ্টকর হতে পারে। এর পাশাপাশি শরীর অসুস্থ হয়ে পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন হলে ভেইন পাওয়া কষ্টকর হয়ে যায়। সচরাচর হাসপাতালে দেখা যায়, অনেক শকের রোগীর কাছ থেকে পরীক্ষার জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে কষ্ট হয়, ভেইন না পাওয়ার কারণে। তাঁদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, শকের চিকিৎসা করলে ভেইনগুলো আগের অবস্থায় ফিরে আসে। তখন আবার ভেইন পাওয়া সহজ হয়ে যায়।

অনেক শকের রোগীর কাছ থেকে পরীক্ষার জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে কষ্ট হয়, ভেইন না পাওয়ার কারণে

যাঁরা নিয়মিত শিরা দিয়ে মাদক সেবন করেন, তাঁদেরও পরবর্তী সময়ে ভেইন ছোট হয়ে যায়। ভেইন না পাওয়ার এ রকম সমস্যায় অনেক সময় সংলগ্ন চামড়াতে একটু ধরে নাড়াচাড়া করলে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। আর একান্তই যদি কিউবিটাল ভেইন না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে গলায় সেন্ট্রাল ভেইন বা পায়ের ভেইনও ব্যবহার করা যায়।