বাড়িতে ডেঙ্গু রোগী, কী করব?

জ্বল বাড়তে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতীকী ছবি
প্রথম আলো

ডেঙ্গু হলেই যে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে, তা কিন্তু নয়। বাড়িতেই অনেকে সুস্থ হয়ে যান। তবে বাড়িতে তাঁর যত্ন নিতে হবে ঠিকঠাক। বিপদচিহ্ন দেখা দিলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতিও রাখতে হবে। আর বাড়ি থেকে চিকিৎসা নিলেও একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকা আবশ্যক, নিয়মিত কিছু রক্ত পরীক্ষারও প্রয়োজন। আবার হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে এলেও কিছুদিন রোগীকে একটু সাবধানে রাখতে হবে।

ডেঙ্গু রোগীর প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূর্ণ। ২-৫ দিনে সাধারণত জ্বর ছেড়ে যায়, আর জ্বর ছেড়ে গেলেই শুরু হয় বিপজ্জনক ধাপ। আগে কখনো ডেঙ্গু হয়ে থাকলে পরে আবার ডেঙ্গু হলে জটিলতার ঝুঁকি বেশি। শিশু ও বয়স্কদের প্রতি সব সময়ই বাড়তি খেয়াল রাখা প্রয়োজন। পানিশূন্যতার কারণে তাদের জটিলতা তৈরি হয় দ্রুত। হৃদ্‌রোগী, কিডনি বা লিভার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং গর্ভবতী নারীদের ঝুঁকিও বেশি। কোনো জটিলতা না হলেও ডেঙ্গু রোগীর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে অন্তত দুই সপ্তাহ সময় প্রয়োজন। আর জটিলতা থাকলে আরও বেশি। সেই সময়টাতে বাড়িতে ডেঙ্গু রোগীর যত্নআত্তি প্রসঙ্গে জানালেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মতলেবুর রহমান—

প্রতিদিনের করণীয়

ডাবের পানি পান করতে পারেন। মডেল: শারমীন
  • প্রচুর তরল খেতে হবে। স্যালাইন, ডাবের পানি এবং লবণমিশ্রিত অন্যান্য পানীয় গ্রহণ আবশ্যক। খাবারে রুচি না থাকলেও অল্প অল্প করে বারবার নানান রকম তরল খেতে হবে।

  • জ্বর থাকলে কুসুম গরম পানিতে গা মুছিয়ে দিন। রোগী চাইলে কুসুম গরম পানিতে গোসলও করতে পারেন। তবে একা একা গোসলখানায় যাতে মাথা ঘুরে পড়ে না যান, সেদিকে লক্ষ রাখা আবশ্যক।

  • রোগীর পূর্ণ বিশ্রাম চাই। ভারী কাজ, ব্যায়াম বা দৌড়ঝাঁপ না করাই ভালো।

  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আবশ্যক। রক্তপাতের ভয়ে দাঁতব্রাশ বাদ দেবেন না। খেয়াল রাখুন, ব্রাশ করার সময় রক্তপাত হচ্ছে কি না। প্রতি কিউবিক মিলিমিটারে প্লাটিলেট ১০ হাজারের নিচে নামলে সাবধানে ব্রাশ করান। এমন পরিস্থিতিতে রোগীকে সাধারণত হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

  • এ সময়ে নারীদের মাসিক হলে খেয়াল রাখুন, বেশি রক্তপাত হচ্ছে কি না, বেশি দিন ধরে রক্তপাত হচ্ছে কি না বা চাকা চাকা রক্ত যাচ্ছে কি না।

  • প্লাটিলেট কমে গেলে আতঙ্কিত হবেন না। প্লাটিলেটের চেয়ে কিন্তু হেমাটোক্রিট বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

  • পেঁপেপাতার রসের মতো ভিত্তিহীন টোটকা নেবেন না।

বিপদচিহ্ন

  • শিরার গতি বেড়ে যাওয়া

  • রক্তচাপ কমে যাওয়া

  • যেকোনো ধরনের রক্তপাত বা চামড়ায় ফুসকুড়ি

  • হঠাৎ প্রচণ্ড দুর্বলতা

  • নিস্তেজ বা অজ্ঞান হয়ে পড়া

  • খিঁচুনি

এমন কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়াই ভালো।