মাথা ঘোরা বা ভার্টিগো একটি পরিচিত সমস্যা। এটি মূলত দুই ধরনের।
চারদিকে সবকিছু ঘুরছে, এমনটা মনে হলে, ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গেলে বা পড়ার ভাব হলে তাকে বলে ট্রু ভার্টিগো।
এটি হওয়ার কারণ—
১. মস্তিষ্কের রোগ, যেমন স্ট্রোক, ব্রেন টিউমার, মস্তিষ্কে সংক্রমণ হলে।
২. কানের রোগ, যেমন কানে কম শোনা, কানে পুঁজ বা পানি যাওয়া, অন্তঃকর্ণ বা মধ্যকর্ণের প্রদাহ হওয়া।
৩. শরীরে প্রয়োজনীয় কোনো লবণের পরিমাণ কমে যাওয়া বা কিছু কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও হতে পারে।
রোগী মনে করেন মাথার ভেতর ঘুরছে, মনে হচ্ছে পড়ে যাবেন, ভারসাম্যহীন হয়ে যাবেন। কিন্তু আসলে মাথা ঘোরে না। সিউডো ভার্টিগো বেশি দেখা যায় নারীদের মধ্যে।
এটি হওয়ার কারণ—
১. হতাশা।
২. দুশ্চিন্তা।
৩. অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অস্থিরতা।
৪. অতিরিক্ত কাজের চাপ।
আবার অনেক সময় বসা থেকে শোয়া, শোয়া থেকে বসা, এপাশ-ওপাশ করতে গেলে অথবা বসা থেকে দাঁড়াতে গেলেও মাথা ঘোরায়। একে বলে বিনাইন প্যারোক্সিসমাল পজিশনাল ভার্টিগো।
আকস্মিক মাথা ঘোরা স্ট্রোকের একটা লক্ষণ হতে পারে। তবে এর সঙ্গে অন্যান্য লক্ষণ আছে কি না, খেয়াল করতে হবে।
১. মুখ একদিকে বেঁকে যাওয়া।
২. শরীরের যেকোনো এক পাশ দুর্বল হয়ে যাওয়া বা শক্তি হারানো।
৩. ভারসাম্য না রাখতে পারা বা পড়ে যাওয়া।
৪. প্রচণ্ড মাথাব্যথা
৫. মাথা ঘোরানোর সঙ্গে সঙ্গে বমি হওয়া।
৭. খাবার গিলতে না পারা বা গিলতে গেলে শ্বাসকষ্ট বা কাশি শুরু হওয়া।
সুতরাং শুধু মাথা ঘোরা মানেই স্ট্রোক নয়। তবে এটি স্ট্রোকের একটা উপসর্গ হতে পারে। তাই মাথা ঘোরানোর কারণ যা–ই হোক, যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের কাছে যাওয়া যাবে, তত রোগী ও রোগীর পরিবারের জন্য ভালো।
ডা. হিমেল বিশ্বাস, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা, নিউরোমেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, পান্থপথ, ঢাকা।