কেবল বয়স বাড়লেই যে মানুষ ভুলোমনা হয়ে যায়, তা কিন্তু নয়। স্মৃতিশক্তির স্বাভাবিকতার সঙ্গে জীবনধারাও গভীরভাবে সম্পৃক্ত। রোজ সকালে এমন কিছু কাজের অভ্যাস করতে পারেন, যা আপনার মস্তিষ্কের স্মৃতি ধারণক্ষমতাকে বাড়াতে সাহায্য করবে। স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কী করতে হবে, তা জানার আগে আরও একটি বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন। ‘মাল্টি টাস্কিং’ আপনার স্মৃতিকে দুর্বল করে দিতে পারে। একই সঙ্গে অনেক কাজ করতে পারার সক্ষমতাকে আজকের করপোরেট দুনিয়ায় সাধুবাদ জানানো হলেও বিজ্ঞান কিন্তু নিরুৎসাহিত করে এমন চর্চাকে। ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. সাইফ হোসেন খান জানালেন এমনটাই। তাঁর কাছ থেকেই জেনে নেওয়া যাক, সকালের কোনো কোনো অভ্যাসে স্মৃতিশক্তি প্রখর হতে পারে।
নির্মল, পরিচ্ছন্ন বাতাসে দম নিন প্রাণভরে। সম্ভব হলে বাড়ির বাইরে যান। নইলে অন্তত বারান্দায় দাঁড়িয়ে শ্বাস নিন কিছুক্ষণ। বিশুদ্ধ বাতাসে আপনি সতেজ হবেন। কাজে মনোযোগ দেওয়া সহজ হবে। ঠিকঠাকমতো কাজ করতে পারবেন ধারাবাহিকভাবে। ভুলোমনা হয়ে কিছু বাদ পড়ার ঝুঁকিও কমবে।
সকালের রোদ গায়ে মাখান। ভিটামিন ডি যেমন পাবেন, তেমনি মন হয়ে উঠবে সতেজ। মস্তিষ্কও স্মৃতিধারণ করতে পারবে সহজে। সকাল ১০টার পরের রোদে পাবেন প্রচুর ভিটামিন ডি। কর্মক্ষেত্রে থাকার কারণে সে সময় গায়ে রোদ মাখার সুযোগ না মিললে আরও আগেই না হয় কিছুক্ষণ রোদে থাকলেন। এ ছাড়া সময়–সুযোগ মিলিয়ে ছুটির দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে কিছুটা সময় রোদে থাকুন।
সকালে উঠে অল্প সময়ের জন্য হলেও ধ্যান করুন। মনটা স্থির হবে। মনোযোগ এবং স্মৃতিশক্তি বাড়বে।
মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডের জন্য শরীরচর্চাও জরুরি। যেকোনো একটি ব্যায়াম করতে পারেন রোজ সকালে। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে বাড়ির বাইরে হাঁটতে গেলে খানিকটা রোদ আর বিশুদ্ধ হাওয়া পাবেন, আর শরীরচর্চার সব সুফলও পাবেন।
পত্রিকায় পাতার শব্দ মেলানোর খেলা কিংবা সুডোকু নিয়ে খানিকটা সময় কাটাতে পারেন সকালে। শিশুর সঙ্গে বসে ‘পাজল’ মেলাতে পারেন। কিংবা কিছুক্ষণ বই পড়তে পারেন। নতুন কিছু শেখার থাকলে এ সময়টাকে কাজে লাগাতে পারেন।
হোল গ্রেইন, অর্থাৎ রিফাইনড বা পরিশোধিত নয়, এমন শস্যদানা থেকে তৈরি খাবার, স্বাস্থ্যকর স্নেহজাতীয় খাবার এবং আমিষ খান সকালে। সবজি এবং ফলমূলও খেতে পারেন।
পানিশূন্যতায় ভুগলে দেহ-মন অবসন্ন হয়ে পড়ে। মস্তিষ্কসহ দেহের সব কোষ সঠিকভাবে কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে রোজ। এক গ্লাস পানি খেয়ে নিতে পারেন ঘুম থেকে ওঠার পরপরই। এভাবে সারা দিনের প্রয়োজনীয় পানির খানিকটা জোগান পাবে আপনার দেহ। আর তাহলে মস্তিষ্কের কোষগুলো পানিশূন্যতায় ভুগবে না, স্মৃতি ধরে রাখার কাজটিও করতে পারবে ঠিকঠাক।