ম্যাগনেশিয়াম আমাদের শরীরের ৩০০টির বেশি জৈবরাসায়নিক ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পেশি ও স্নায়ুর কার্যক্রম বাড়িয়ে হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখে ম্যাগনেশিয়াম। শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে হাড় শক্তিশালী করতেও এর ভূমিকা দারুণ। এই মৃৎক্ষার ধাতু আমাদের রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, বিপাক এবং স্বাভাবিক রক্তচাপও বজায় রাখে।
অপর্যাপ্ত মাত্রায় ম্যাগনেশিয়াম গ্রহণ করার ফলে যখন শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, তখন তাকে ম্যাগনেশিয়ামের অভাব বলে। সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা বজায় রাখার জন্য খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন বা সম্পূরক খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অসাড়তা ও ঝিঁঝি ধরা
ম্যাগনেশিয়ামের অভাবে স্নায়ুর কার্যক্রমে বাধা পড়ে হাতে বা পায়ে অসাড়তা দেখা দিতে পারে। আবার ঝিঁঝি ধরা বা সুচের তীক্ষ্ণ আচড়ের মতো ব্যথার অনুভূতি হতে পারে।
হৃৎপিণ্ডের ছন্দের অস্বাভাবিকতা
ম্যাগনেশিয়াম আমাদের হৃৎপিণ্ডের পেশির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। তাই এর ঘাটতি মারাত্মক হলে হৃৎপিণ্ডের ছন্দের অস্বাভাবিকতা বা বুক ধড়ফড়ানি দেখা দিতে পারে।
অসুস্থ বোধ হওয়া
ম্যাগনেশিয়ামের ঘাতটি হলে নিউরোমাসকুলার কার্যক্রমে বাধা পড়ে। এর ফলে পেশির দুর্বলতা, কাঁপুনি ও শরীরে অনিচ্ছাকৃত মোচড়ের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া
ম্যাগনেশিয়ামের ঘাতটি হলে তা আমাদের পরিপাকতন্ত্রের পেশির ক্ষতিসাধন করে। এর ফলে আমাদের বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, ক্ষুধামান্দ্য দেখা দিতে পারে।
মাথাব্যথা হওয়া
ম্যাগনেশিয়াম আমাদের দেহের রক্তনালির সংকোচন এবং নিউরোট্রান্সমিটার পরিবহনে ভূমিকা রাখে। তাই এর অভাব হলে মাথাব্যথা ও মাইগ্রেনের যন্ত্রণা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
ক্লান্তি বোধ হওয়া
ম্যাগনেশিয়াম আমাদের শরীরের শক্তি উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। তাই এর মাত্রা কমে গেলে অবিরাম ক্লান্তিবোধ ও দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
উদ্বেগ দেখা দেওয়া
ম্যাগনেশিয়াম আমাদের শরীরের নিউরোট্রান্সমিটার নিয়ন্ত্রণ এবং চাপের প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত। তাই এর অভাব হলে উদ্বেগ ও নার্ভাসনেস বেড়ে যেতে পারে।
ঘুম না হওয়া এবং ইনসমনিয়া দেখা দেওয়া
ম্যাগনেশিয়াম আবার ঘুমের সঙ্গে সম্পর্কিত নিউরোট্রান্সমিটার নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। তাই এর অভাব হলে ঘুম আসতে বা ঘুমাতে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
পেশিতে টান বা ক্র্যাম্প
ম্যাগনেশিয়ামের অভাব হলে পেশির কার্যক্রমে বাধা পড়ে। এর ফলে ঘন ঘন মাংশপেশিতে টান বা ক্র্যাম্পের মতো সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে কাঁধ, পা ও হাতের পেশিতে টান বেশি পড়ে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া