শরীরে পানির পরিমাণ বেড়ে শরীর ফুলে যাওয়াকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় ইডিমা বলা হয়। অনেক সময় হৃদ্রোগ, কিডনি জটিলতা, লিভার ফেইলিওর, থাইরয়েড জটিলতা ইত্যাদির কোনো একটির কারণে শরীরে পানি আসতে বা পা–মুখ ফুলতে পারে।
আবার কখনো কখনো পানি আসার সুস্পষ্ট কোনো কারণ পাওয়া যায় না। পানি জমে শরীর ফুলে যাওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া না গেলে তখন একে ‘ফ্লুইড রিটেনশন সিনড্রোম’ বলে। অনেক সময় একে ‘ইডিওপেথিক ইডিমা’ বলা হয়।
এই সমস্যা সাধারণত ২০-৫০ বছরের নারীদের বেশি হয়ে থাকে। পুরুষ ও শিশুদের আক্রান্তের হার বিরল।
এ রোগের প্রকৃত কারণ অজানা। তবে কিছু কারণে এই সমস্যার সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যায়। যেমন—
স্থূলতা l নিজের অথবা পরিবারে কারও ডায়াবেটিস l মানসিক সমস্যা l জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল, মূত্রবর্ধক, ল্যাক্সাটিভসহ বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন।
মুখ, হাত, পেট ও পা ফুলে যাওয়া। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অর্থাৎ বিকেল ও সন্ধ্যার দিকে আরও বেড়ে যায়। বিকেলের দিকে জুতা বা স্যান্ডেল পরতে অসুবিধা হয়, পরনের জামা টাইট হয়ে যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মাসিকের আগে আগে এসব উপসর্গ দেখা দেয়—
পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য l মাথাব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা l অতিরিক্ত ক্লান্তিভাব বা অবসাদ l খিটখিটে মেজাজ, উদ্বেগ, অনিদ্রা, বিষণ্নতা l অতিরিক্ত পিপাসা লাগা, রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব ইত্যাদি।
প্রথমেই রোগীকে কাউন্সেলিং করতে হবে, বোঝাতে হবে এ রোগ মারাত্মক কোনো কিছু নয়।
অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে ও ব্যায়াম করতে হবে।
দীর্ঘক্ষণ টানা দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা যাবে না। ঘুমের সময় পা বালিশের ওপর দিয়ে উঁচু করে রাখতে হবে
পরিমিত খাদ্যগ্রহণ এবং খাবারে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া যাবে না।
মাঝেমধ্যে ওষুধ লাগতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করতে হবে।
ডা. ইসরাত জাবীন, সহকারী অধ্যাপক, মেডিসিন, গ্রীন লাইফ মেডিকেল কলেজ