প্রতিদিন কতটুকু লবণ খাবেন?

বেশি লবণ গ্রহণ করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে
ছবি: সংগৃহীত

খাবার লবণ হলো সোডিয়াম ক্লোরাইড। সোডিয়াম শরীরের জন্য জরুরি এক উপাদান। শরীরের পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে, স্নায়ু ও পেশির স্বাভাবিক কাজ চলমান রাখতে সোডিয়াম চাই ঠিকঠাক। তবে মাত্রাতিরিক্ত সোডিয়াম দেহের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, হৃদ্‌রোগ, কিডনির রোগ, পাকস্থলীর ক্যানসার এবং হাড়ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে। তাই প্রতিদিন ঠিক কতটা লবণ গ্রহণ করা উচিত, তার হিসাবটা জানা থাকা প্রয়োজন।

প্রতিদিন সোডিয়াম গ্রহণের মাত্রা ২ হাজার ৩০০ মিলিগ্রামের মধ্যে সীমিত রাখতে হবে। এক চা–চামচ লবণে থাকে ২ হাজার ৩২৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম। অর্থাৎ রোজ লবণ খেতে পারবেন এক চা–চামচেরও কিছুটা কম পরিমাণে। রান্না করা খাবারে থাকা স্বাভাবিক মাত্রার লবণ দিয়েই রোজকার সোডিয়ামের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। এর থেকে বেশি লবণ গ্রহণ করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। তাই যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে:

  • পাতে বাড়তি লবণ নেবেন না। খাবার টেবিলে লবণের পাত্রও রাখবেন না। রান্নায় অতিরিক্ত লবণ দেবেন না।

  • লবণ খাবারের স্বাদ বাড়ায়। ফলমূল, সালাদ প্রভৃতি আমরা অনেক সময়ই লবণ দিয়ে খাই। এমন অভ্যাস পরিত্যাজ্য। বরং খাবারকে সুস্বাদু করে তুলতে নানা রকম মসলা, লেবু বা অন্যান্য টক ফলের রস, টাটকা বা শুকনা তৃণ (যেমন ধনেপাতা) প্রভৃতি ব্যবহার করতে পারেন।

  • রান্নার অনেক পদেই (স্যুপ, স্ট্যু, এমনকি মূল খাবারেও) চাইলে লবণের মাত্রা একটু কমিয়ে দেওয়া যায় (স্বাদ বাড়ানোর বিকল্প পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়)। রেস্তোরাঁয় খেতে গেলেও ফরমাশ দিতে পারেন, যাতে খাবারে লবণের মাত্রা কম রাখা হয়।

  • সস বা কেচাপ, সয়া সস, পনির, মেয়োনিজ, চিপস, চানাচুর, কাসুন্দি, শর্ষে—সব কটিতেই সোডিয়াম ভরপুর। তাই এগুলো কম খাওয়াই ভালো। ইনস্ট্যান্ট নুডলস, সল্টেড বাটার বা লবণসমৃদ্ধ মাখন, নোনতা বিস্কুট, খোলসযুক্ত মাছ বা প্রাণী, শুঁটকি এবং লবণ দিয়ে সংরক্ষিত অন্যান্য খাবারও (যেমন টিনজাত খাবার) এড়িয়ে চলা উচিত। হট ডগ, সসেজ প্রভৃতিতেও লবণের মাত্রা তুলনামূলক বেশি।

  • খাদ্য বা খাদ্য উপকরণ কেনার সময় প্যাকেটে লেখা সোডিয়ামের মাত্রা দেখে নিন (এমনকি পাউরুটিতেও)। তাহলে হিসাব করে সোডিয়াম গ্রহণ সম্ভব হবে। বেকিং পাউডার ও বেকিং সোডায় কিন্তু লবণ থাকে। তাই এগুলো দিয়ে তৈরি খাবারও হিসাব করে খেতে হবে। সোডিয়াম নানা রাসায়নিক নামে থাকতে পারে (যেমন মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট)। প্রতি প্যাকেটে কতটি পরিবেশন (সারভিং) হবে, সেটিও লেখা থাকে। প্রতি পরিবেশনে ২০০ মিলিগ্রামের বেশি সোডিয়াম থাকলে তা একেবারে না কেনাই ভালো।

  • কেউ কেউ একটু নোনা স্বাদ না হলে খাবার খেতে পারেন না। এমন ব্যক্তি খুব অল্প অল্প করে খাবারে লবণের মাত্রা কমিয়ে আনার অভ্যাস করতে পারেন।