সুস্থ জীবনযাপনের জন্য ঘুমের প্রয়োজনীয়তা নতুন করে ব্যাখ্যা করে বলার কিছু নেই। কিন্তু অনেকেই সারা দিন কাজ শেষে রাতে বিছানায় গা এলিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে চোখের সামনে ধরছেন মুঠোফোন। দীর্ঘক্ষণ পর্দার দিকে তাকিয়ে থেকে সকালেই আবার বেরিয়ে পড়েন নিয়মিত কাজে। যার প্রভাব পড়ে দৈনন্দিন জীবনে।
একজন পূর্ণবয়সী মানুষের সুস্থ থাকতে অন্তত সাত ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, অতিরিক্ত রাত জাগার কারণে পর্যাপ্ত বিশ্রাম পাচ্ছে না শরীর। আর সেই ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত শরীর নিয়েই নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন অনেকে। জমে থাকা ঘুমের কোটা আর পূরণ হচ্ছে না। ফলে কিছুদিন যেতে না যেতেই প্রভাব পড়ছে শরীরে। এই কম ঘুমের সুদূরপ্রসারী ফল হতে পারে ভয়াবহ।
সাধারণত আমাদের শরীরে ঘুম ও জেগে থাকার একটি নির্দিষ্ট নিয়ম থাকে। যাকে ইংরেজিতে বলে ‘বায়োলজিক্যাল ক্লক’। এই দেহঘড়ি অনুযায়ী প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটা সময় রাখতে হয় ঘুম বা বিশ্রামের জন্য। পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পেলে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে শরীরের ওপর। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন, আপনার শরীরে ঘুমের অভাব দেখা দিচ্ছে?
শরীরে বল পাচ্ছেন না
রাতে ঘুম হওয়ার পরও সকালে কাজের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ শক্তি পাচ্ছেন না। আগে যে কাজ অনায়াসে সম্পন্ন করতে পারতেন, সেই কাজ করতে দুনিয়ার সব ক্লান্তি ভর করছে শরীরে। ঘুমের অভাব থেকে শরীরে ভর করতে পারে এই ক্লান্তিবোধ।
কাজে মন দিতে পারছেন না
ঘুমের অভাব আপনার মনোযোগের ওপরও প্রভাব ফেলে। ঘুমের অভাব দেখা গেলে কাজে মনোযোগ দেওয়া, সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, যা প্রভাব ফেলে আপনার কর্মক্ষেত্রে।
রোগবালাই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে
ঘুম কম হলে তার প্রভাব পড়তে থাকে শরীরের প্রতিটি অঙ্গে। ঘুম কম হলে উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর আগে থেকেই যদি এ রকম সমস্যা থাকে, তাহলে ঘুমের অভাব সমস্যাগুলোর মাত্রা আর বাড়িয়ে তোলে। কম ঘুম রক্তচাপ বাড়াতে ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে ঘুমের অভাবের কারণে হরমোনের মাত্রার পরিবর্তন হয়।
সারা দিন খিটখিটে বোধ করেন
ঘুমের অভাব আপনার মন-মেজাজের ওপরও প্রভাব ফেলতে শুরু করে। ঘুমের অভাবে ছোট ছোট বিষয় নিয়ে রাগ করা, মেজাজ খিটখিটে থাকা, এমনকি বিষণ্ন বোধ করতে পারেন যে কেউ।
ঘন ঘন জ্বর-সর্দি হচ্ছে
ঘুমের অভাব আপনার রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিতে পারে। যে কারণে ছোটখাটো অসুস্থতা, যেমন জ্বর, সর্দি, কাশি লেগেই থাকে। সহজে ছেড়ে যেতে চায় না।
মনে রাখবেন, নিজের মস্তিষ্ককে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখার জন্য প্রতিদিন নিয়মমাফিক ঘুমের প্রয়োজন। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ফুরফুরে মেজাজে সকালটা শুরু করলে বোঝা যায়, ঘুমের অভাব ঠিকঠাক পূরণ হয়েছে।
তথ্যসূত্র: ইউএস নিউজ হেলথ