বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের জন্য পবিত্র মাস রমজান। সারা বছর আমরা যা খাই, রমজানে তার কিছুটা পরিবর্তন হয়ে থাকে। তাই রমজানের জন্য আমাদের পূর্বপ্রস্তুতির প্রয়োজন। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে রমজানের প্রায় এক থেকে দুই সপ্তাহ আগে প্রতিদিনের খাবারের অংশ কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। আরও যা প্রয়োজন—
স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যা থাকলে, যেমন ডায়াবেটিস, গ্যাস্ট্রিক, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানি—যার জন্য নিয়মিত ওষুধের প্রয়োজন। তাহলে রমজানে সেগুলো কী মাত্রায় গ্রহণ করবেন, তার জন্য চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। বিশেষ করে যাঁরা ইনসুলিন নেন, তাঁদের ডোজ ও সময় ঠিক করে নিতে হবে।
অনেকেই পরিকল্পনা করেন যে রমজানে ওজন কমাবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখেন ওজন তো কমেইনি বরং বেড়ে গেছে। আবার ডায়াবেটিস, হার্ট বা কিডনি রোগীর জন্য রমজানে বিশেষ ধরনের খাদ্য পরিকল্পনা প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে রোজা শুরুর আগে পুষ্টিবিদের কাছ থেকে খাদ্যতালিকা করিয়ে নিতে পারেন।
যাঁদের একটু পরপর চা-কফি পানের অভ্যাস, তাঁরা আগে থেকেই এসব কমিয়ে আনুন। নয়তো রমজানে একাগ্রতায় সমস্যা হতে পারে। ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার এটা শ্রেষ্ঠ সময়।
যাঁরা নিয়মিত জিমে যান বা ব্যায়াম করেন, তাঁরা রমজানেও এসব বজায় রাখার ইচ্ছে থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভালো। সাধারণত রমজানে যেকোনো ব্যায়াম সন্ধ্যার পর করতে বলা হয়।
পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন ও হাইপোগ্লাইসেমিয়ার (রক্তের গ্লুকোজ বা শর্করা হঠাৎ নেমে যাওয়া) মতো জটিলতার লক্ষণ থাকলে রমজানের আগেই সুচিকিৎসা করিয়ে নিন। কিডনি বা ইলেকট্রোলাইটের সমস্যা থাকলে আগেই পরীক্ষা করান।
রাতে ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম দরকার। পর্যাপ্ত ঘুম হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার ঝুঁকিও কমাতে পারে। রমজানে সাহ্রি খাওয়ার জন্য ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এ ক্ষেত্রে কীভাবে ঘুম পুষিয়ে নেবেন, তার একটা পরিকল্পনা করুন।
রমজানে সুষম খাবার খাওয়া অন্য সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি। আমরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উপবাস করি। তাই এমন খাবার খাওয়া প্রয়োজন, যা অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি দেবে। তাই পরিবারের সবার কথা বিবেচনা করে পুষ্টিকর ইফতারি ও সাহ্রির একটি তালিকা করে সেভাবে আগে থেকে প্রস্তুতি নিন। রমজানের বাজার করার সময় পুষ্টির কথা বিবেচনা করুন। প্যানিক বায়িং বা অযথা কেনাকাটা করবেন না।
পুষ্টিবিদ, পিপলস হাসপাতাল, খিলগাঁও, ঢাকা