শিশুদের ব্রেন টিউমার

শিশু বয়সেও ব্রেন টিউমার হতে পারে। তবে ব্রেন টিউমারের কারণ এখনো অজানা। মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের মধ্যে এর হার কিছুটা বেশি। দুই ধরনের ব্রেন টিউমার দেখা যায়—

প্রাইমারি: টিউমারের উৎপত্তি মগজেই হয়ে থাকে।

সেকেন্ডারি: টিউমারের উৎপত্তিমূল থাকে শরীরের অন্য কোনো অংশে। পরবর্তী সময়ে ক্যানসার কোষ মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে টিউমার তৈরি করে।

প্রাইমারি ব্রেন টিউমার

এগুলো ব্রেনের অভ্যন্তরের যেকোনো কোষ থেকে উৎপন্ন হতে পারে। টিউমার নিরীহ প্রকৃতির বা ক্যানসার—দুই রকমই হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রাইমারি ব্রেন টিউমার নিরীহ ধরনের হয়। এ টিউমার নিজস্ব স্থানে থাকে, অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়ে না বা ব্রেনের অন্য অংশ ধ্বংস করে না।

শিশু বয়সে দুটি প্রধান ব্রেন টিউমার হতে দেখা যায়—

গ্লাইওমা টিউমার: শিশু বয়সে এস্ট্রোসাইটোমা ও এবোনডাইমোমা—এ দুই শ্রেণির বেশি হতে দেখা যায়।

ব্রেন স্টেম: সেরিবেলাম থেকে ব্রেনের অন্যান্য অংশে বা মেরুদণ্ডের স্নায়ুতন্ত্রে ছড়িয়ে যেতে পারে।

লক্ষণ

  • শিরঃপীড়া, বমি, ঝিমানো ভাব, খিঁচুনি, পরবর্তী সময়ে জ্ঞান লোপ।

  • অল্প বয়সী শিশুর মাথার আকার বাড়া।

  • ব্রেনের কোন অংশে টিউমার উৎপন্ন হয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে অন্যান্য লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন সেরিবেলামে গজানো টিউমারের কারণে শিশু স্থিরভাবে সরলরেখা ধরে হাঁটতে পারে না। 

পরীক্ষা

  • ব্রেনের এমআরআই বা সিটি স্ক্যান।

  • চোখ ও শ্রবণশক্তির পরীক্ষা।

  • রক্ত পরীক্ষা ও বুকের এক্স-রে।

  • অস্ত্রোপচারকালে টিউমার বায়োপসি। এটি করতে হবে এর প্যাথলজিক্যাল শ্রেণি নির্ণয়ের জন্য।

চিকিৎসা

  • সার্জারির মাধ্যমে টিউমার সম্পূর্ণ অপসারণ সম্ভব না হলে বা কিছু ক্যানসার কোষ থেকে যাওয়ার ঝুঁকি থাকলে রেডিওথেরাপির সাহায্য নিতে হয়।

  • স্টেরয়েড ব্রেন টিউমারের চারপাশের স্ফীতি কমাতে সাহায্য করে।

  • খিঁচুনি থাকলে খিঁচুনি নিরোধক ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।

  • অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল