ভালো থাকুন

গরমের দিনে লাউ খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে, আছে আরও অনেক পুষ্টিগুণ

এখন সারা বছরই বাজারে লাউ পাওয়া যায়
ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশে জনপ্রিয় সবজির অন্যতম লাউ, যেটি এখন প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। সুস্বাদু ও পুষ্টিকর এই সবজি ঝোল, নিরামিষ, ভাজি, ভর্তা কিংবা সালাদ হিসেবে খাওয়া যায়। এর খোসা, শাঁস, পাতা সবই খাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম লাউয়ে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট ২.৫ গ্রাম, প্রোটিন ০.২ গ্রাম, ফ্যাট ০.৬ গ্রাম, ভিটামিন সি ৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৮৭ মিলিগ্রাম, নিকোটিনিক অ্যাসিড ০.২ মিলিগ্রাম। এ ছাড়া এতে রয়েছে খনিজ লবণ, ভিটামিন বি-১, বি-২, আয়রনসহ আরও নানা উপাদান।

● কম ক্যালরিসম্পন্ন লাউয়ের ৯৬ শতাংশ পানি। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার। তাই লাউ খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। এ কারণে লাউ ওজন কমাতে সহায়ক। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ।

● লাউয়ে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় ডায়েটারি ফাইবার আছে। দ্রবণীয় ডায়েটারি ফাইবার খাবার হজম করতে সাহায্য করে এবং হজমসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে। এ ছাড়া নিয়মিত লাউ খেলে গলা-বুক জ্বালা করা, অ্যাসিডিটি, পেট ফাঁপা, অজীর্ণ ও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হয়। আর অদ্রবণীয় ডায়েটারি ফাইবার পাইলসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

● লাউয়ের মূল উপাদান পানি। তাই লাউ খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং রাতে ভালো ঘুম হয়। গরমের দিনে লাউ খেলে শরীর ঠান্ডা হয়। এতে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে। ঘামে শরীর থেকে যে পানি ও খনিজ লবণ বের হয়ে যায়, তার অনেকটাই পূরণ করতে পারে লাউ। 

● লাউয়ে প্রাকৃতিক প্রোটিন, ভিটামিন সি, আয়রন ফাইবারসহ অনেক উপাদান রয়েছে। তাই ত্বককে সুস্থ ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে লাউ। ত্বকের তৈলাক্তের সমস্যা কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। লাউ মুখে ব্রণের প্রবণতা কমায়। 

● জ্বর, ডায়রিয়া ও অন্যান্য বড় ধরনের অসুখে শরীরে পানির অভাব দেখা দিলে প্রচুর পরিমাণে লাউয়ের তরকারি খেতে পারেন। এতে শরীরের পানিশূন্যতা দূর হবে।

● নিয়মিত লাউ খেলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা হলদে হওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

লাউয়ের মতো লাউশাকেও রয়েছে নানা উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ। এই শাক ফলিক অ্যাসিডসমৃদ্ধ। ফলিক অ্যাসিডের অভাবে গর্ভস্থ শিশুর স্পাইনাল কর্ডের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়; এতে প্যারালাইসিস, মস্তিষ্ক বিকৃতি অথবা মৃত শিশুর জন্ম হতে পারে।

● লাউশাকে থাকা ভিটামিন সি, ঠান্ডা-জ্বর, সর্দি ও যেকোনো ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

● উচ্চ মাত্রায় ক্যালসিয়াম থাকায় এটি অস্টিওপোরেসিস ও অন্যান্য ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত রোগের ঝুঁকি কমায়।

● লাউশাকে থাকা আয়রন রক্তস্বল্পতা রোধে সাহায্য করে।

ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান), খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক কেন্দ্র