বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লার বুড়িচংয়ের ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া এলাকায় গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে বহু গ্রাম। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে মানুষ
বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লার বুড়িচংয়ের ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া এলাকায় গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে বহু গ্রাম। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে মানুষ

ভালো থাকুন

বন্যাদুর্গত এলাকায় স্বাস্থ্যসতর্কতা

দেশের বিরাট এলাকায় এখন বন্যা হচ্ছে। ডুবে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। আশার কথা, পানি নামতে শুরু করেছে, অতিবৃষ্টিও থেমেছে। তবে এ সময় দেখা দিতে পারে নানা রকমের রোগবালাই। এমনকি মহামারি আকারে কিছু রোগ দেখা দিতে পারে। এ বিষয়ে আগে থেকেই সাবধান থাকতে হবে।

যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। ভেজা বা আধভেজা কাপড় গায়ে রাখা ঠিক নয়।

ডায়রিয়া, কলেরা

বন্যাকবলিত এলাকায় প্রকট হয়ে ওঠে বিশুদ্ধ পানির অভাব। টিউবওয়েল নিমজ্জিত হয়ে যাওয়া ও পানি ফোটাতে না পারার সমস্যায় এমন হয়। তা ছাড়া বন্যার পানিতে মানুষ ও পশুপাখির মলমূত্র, আবর্জনা, এমনকি মৃতদেহের অবশেষও মিশে যায়। সে কারণে ছড়িয়ে পড়ে নানা জীবাণু।

ডায়রিয়া বা কলেরা হলে প্রথম করণীয়, মুখে খাওয়ার স্যালাইন পান করা। যতবার বমি বা পাতলা পায়খানা হবে, ততবার স্যালাইন খেতে হবে। মুখে স্যালাইন খেতে না পারলে, জ্বর হলে, পায়খানার সঙ্গে রক্তপাত হলে বা তীব্র পানিশূন্যতা দেখা দিলে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। ছোট শিশু মায়ের দুধ পান চালিয়ে যাবে। অন্যরা স্বাভাবিক খাবার খাবেন।

শ্বাসতন্ত্রের রোগ

এ সময় ঠান্ডা লাগা বা পানিতে অনেকক্ষণ থাকায় কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসতন্ত্রের নানা রোগও দেখা দিতে পারে। সাধারণ কাশি বা জ্বরে ওষুধ সেবন করা যায়। হালকা গরম পানি পান বা ভাপ নিলে আরাম পাওয়া যাবে। শ্বাসকষ্ট হলে ইনহেলার বা নেবুলাইজার দরকার হতে পারে। শিশুদের বুকের খাঁচা দেবে যেতে থাকলে বা ঘড় ঘড় শব্দ হলে কিংবা নীল হয়ে গেলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া প্রয়োজন।

ত্বকের রোগ

বন্যার নোংরা পানির সংস্পর্শে আসায় ত্বকে ছত্রাক, খোসপাঁচড়াসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। আশ্রয়কেন্দ্রে গাদাগাদি করে বাস করায় ত্বকের রোগগুলো খুব দ্রুত ছড়ায়। যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। ভেজা বা আধভেজা কাপড় গায়ে রাখা ঠিক নয়। বন্যার্তদের বিতরণে নিয়ে যাওয়া পোশাক অবশ্যই ধোয়া, পরিষ্কার ও শুকনা বা ইস্ত্রি করা হতে হবে। শিশুদের ডায়াপার ও নারীদের স্যানিটারি ন্যাপকিন ছয় ঘণ্টা পরপর বদলানো দরকার এবং যথাযথভাবে প্যাকেট করে ফেলা উচিত। ফেলার মতো জায়গা না পেলে আপাতত মুখবন্ধ ব্যাগে রেখে দেওয়া যায়।

সতর্কতা

  • পচনশীল খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে শুকনা খাবার এ সময় সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা ভালো।

  • যত কষ্ট হোক, পানি বিশুদ্ধ না করে পান করবেন না। তৈজসপত্র ধোয়ার কাজেও বন্যার নোংরা পানি ব্যবহার করা উচিত নয়।

  • বন্যার পানি ত্বকে লাগলে পরে ভালো করে সেই জায়গা ধুয়ে ফেলুন ও শুকনা করে নিন।

  • যাঁরা ত্রাণ নিয়ে যাবেন, তাঁরাও এসব বিষয়ে সতর্ক থাকুন।

  • অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ