আদাজল ও মেথিজল, দুটিতেই আছে এমন কিছু যৌগ ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট উপাদান, যা পেটের চর্বি বা ভুঁড়ি কমায়। তবে এর মধ্যে কোনটি তুলনামূলকভাবে বেশি কার্যকর?
ভুঁড়ি কমাতে চাইলে সকাল সকাল আদাজল পান করা ভালো। আদাজল ক্ষুধা নিবারণ ও ক্যালরি পোড়াতে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা রাখে। এর ডাইইউরেটিক বা মূত্রবর্ধক গুণও আছে। মূত্রবর্ধক হওয়ায় আদাজল পান করলে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশিত হয়ে শরীরের ফোলাভাব কমে। নিয়মিত আদাজল খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা অটুট থাকে, ডায়াবেটিস থাকে নিয়ন্ত্রণে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও আদাজলের সুনাম আছে। কোষ্টকাঠিন্য এবং শরীরের ফোলাভাব কমাতে আদার ব্যবহার বহু পুরোনো। আদায় এমন কিছু অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট উপাদান আছে, যেসব কোষ ধ্বংসকারী ফ্রি-র্যাডিকেলগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ঠান্ডা, কাশি, জ্বর থেকে বাড়তি মেদ কমাতে তাই আদা বেশ কার্যকর নিঃসন্দেহে।
ক্যালরি পোড়ায়
গবেষণা বলছে, নিয়মিত আদাজল খেলে ক্যালরির দহন ও তৃপ্তির অনুভূতি বাড়ে। ফলে ক্ষুধা দূর হয়। আদার থার্মোজেনিক গুণ চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরল কমায়
একাধিক গবেষণায় জানা গেছে, আদা শরীরের কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডসের মাত্রা কমাতে সক্ষম। এটি শরীরের জন্য উপকারী হাই-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন বাড়িয়ে তুলনামূলক ক্ষতিকর লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন কমায়।
সঠিক মাত্রায় পানি ধারণে সাহায্য করে
পানির পরিমাণ বেড়ে শরীর ফুলে যাওয়াকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে এডিমা। আদাজল প্রাকৃতিক ডাইইউরেটিক বা মূত্রবর্ধক। ফলে নিয়মিত আদাজল খেলে শরীর থেকে এই অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশিত হয়। তবে শরীরে তো নির্দিষ্ট মাত্রায় পানি ও সোডিয়ামও থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রেও আদাজল ভারসাম্য রক্ষা করে। আর এতেই পেট হয়ে ওঠে মেদহীন।
পরিপাক ভালো করে
আদায় থাকে ‘জিঞ্জেরল’ নামের এক প্রাকৃতিক উপাদান। এটি খাবারকে পরিপাক নালিতে দ্রুতগতিতে চালিত করে। ফলে খাবার অন্ত্রে দীর্ঘক্ষণ জমে থাকে না। খালি পেটে আদাজল খেলে পরিপাক ক্রিয়া বাড়ে। ফুড সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক পর্যালোচনা থেকে জানা যায়, আদায় থাকা এনজাইমগুলো শরীর থেকে গ্যাস বের করে দিয়ে হজমের জটিলতা দূর করে।
মসলা হিসেবে তো বটেই, মেথি ভেষজ উপাদান হিসেবেও প্রাচীন। সারা রাত মেথির বীজ পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে ওজন কমে। মেথিতে থাকে গ্যালাক্টোম্যানান, যা ক্ষুধা নিবারণ করে এবং বিপাক বাড়ায়। মেথি পরিপাকে সাহায্য করে ভুঁড়ি কমাতে ভূমিকা রাখে। বেশি আঁচে দ্রুত ভেজে রান্না করা খাবার, বড়া, মুরগি, শাক, পরোটার মতো খাবারে মেথি দিতে পারেন অনায়াসে।
পেটফাঁপা এবং বদহজম কমায়
মেথিজল দ্রবণীয় আঁশসমৃদ্ধ বলে বদহজম, পেটফাঁপা ও কোষ্টকাঠিন্য দূর হয়। সকালে খালি পেটে মেথিজল খেলে শরীর থেকে দূর হয় বিষাক্ত উপাদান।
বিপাক ত্বরান্বিত করে
সকালে খালি পেটে মেথিজল খেলে ওজন এবং ভুঁড়িও কমে। মেথিজল বিপাক ত্বরান্বিত করে। ক্ষুধা কমিয়ে ওজন কমাতে ভূমিকা রাখে।
কোলেস্টেরল কমায়
মেথিজলে থাকা দ্রবণীয় আঁশ অপকারী কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদ্রোগসহ অনেক প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকি কমায়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া