শাকিলা ফারহানা একজন কর্মজীবী নারী। শাকিলার সঙ্গে তাঁর মা–ও থাকেন। মায়ের হঠাৎ একদিন ব্রেন স্ট্রোক করে। তাঁকে নিয়ে যানবাহনে করে হাসপাতাল দৌড়াদৌড়ি করা ভীষণ কষ্টের হয়ে দাঁড়ায় কর্মজীবী পরিবারটির জন্য। তখনই তারা খোঁজ পায় ‘মেডইজি’ নামের অ্যাপভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার।
শাকিলা ফারহানা বলেন, ‘আমার এক প্রতিবেশী “মেডইজি” নামের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে নিয়মিত ওষুধ আনান। আমার মায়ের শারীরিক অবস্থা দেখে তাঁরাই পরামর্শ দেন মেডইজিতেই চিকিৎসক দেখাতে। প্রথম দুই-তিনবার আম্মাকে নিয়ে রাস্তার ধকল পেরিয়ে হাসপাতাল যাওয়া, ডাক্তারের জন্য দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা খুব কষ্টের অভিজ্ঞতা ছিল। মেডইজি আমার কাজটাকে আসলেই খুব “ইজি” করে দিয়েছে। এখন ভিডিও কলের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা আম্মাকে দেখছেন।
কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা লাগলে অ্যাপের মাধ্যমেই অর্ডার করার সুব্যবস্থা আছে। বাসায় লোক এসে টেস্টের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। আবার ওষুধগুলোও এই প্রতিষ্ঠানই বাসায় পৌঁছে দিচ্ছে। হয়তো ভাবছেন, না জানি কত খরচ? ৯৯ টাকায় আমরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পেরেছি আর ওষুধ কেনাকাটায় সব সময় ১০ শতাংশ ছাড় পেয়েছি। আমাদের মতো হিসেব করে চলা পরিবারের এই সেবা দারুণ স্বস্তির।’
বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়—বাক্যটি বর্তমানে শুধু কথার কথাই নয়, বাস্তবেও এর প্রমাণ মিলছে। হাতের মুঠোয় থাকা মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী। ফলে অনেক কিছুই চলে এসেছে হাতের নাগালে। নানা রকম অ্যাপের মাধ্যমে এখন প্রায় সব কেনাকাটা ও পরিসেবা গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে। পিছিয়ে নেই স্বাস্থ্যসেবাও। দেশের অনেক প্রতিষ্ঠান চালু করেছে অ্যাপভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা, যার মাধ্যমে ঘরে বসেই গ্রাহকরা নিতে পারছেন চিকিৎসা–পরামর্শ।
সচরাচর আমাদের দেশে দেখা যায়, চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে রোগী এবং তাঁর পরিবারকে পোহাতে হয় নানা বিড়ম্বনা। অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে সরকারি হাসপাতালগুলোতে থাকে উপচে পড়া ভিড়। বেসরকারি হাসপাতালের ব্যয়বহুল চিকিৎসা নেওয়া সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। প্রতিমুহূর্তে আমরা দেখছি, চিকিৎসাসেবা গ্রহণের পুরো প্রক্রিয়াটিতে একজন রোগী এবং তাঁর পরিবারকে পোহাতে হয় নানা কাঠখড়।
বিপরীত চিত্রটা ভাবুন। ঘর থেকে বের না হয়েই দেখাতে পারছেন চিকিৎসক এবং তিনি যেসব ওষুধ দিয়েছেন, তা লিস্ট ধরে ঘরে বসেই পেয়ে যাচ্ছেন। পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করে হয়ে উঠছেন সুস্থ। কল্পনাতীত মনে হলেও এমন ঘটনাকেই বাস্তব প্রমাণ করেছে অ্যাপভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান মেডইজি। অ্যাপভিত্তিক অনলাইন ওষুধ সরবরাহে স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানটি অল্প সময়ে মানুষের আস্থা অর্জন করেছে।
স্বাস্থ্যসেবা–সম্পর্কিত অ্যাপ মেডইজির মাধ্যমে ঘরে বসেই ভিডিও কলের মাধ্যমে নিতে পারবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ। রোগীর নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষাও লোক মারফত বাড়িতে বসে করা যাবে। আর রোগীর প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রও পেয়ে যাবেন সাশ্রয়ী মূল্যে। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় জীবন হয়ে উঠেছে এমনই সহজ।
শাকিলা ফারহানার মতো রাজধানীর অনেকেই অ্যাপভিত্তিক এই স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়েছেন। শাকিলা ফারহানার সূত্র ধরে আমরা যোগাযোগ করি অ্যাপভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান মেডইজির সঙ্গে।
মেডইজি কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাদেশের তিন কোটিরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগসহ অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত। মেডইজির লক্ষ্য হচ্ছে, এই দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্তদের জীবন সহজ করা, গ্রাহকদের কাছে নির্ভরযোগ্য ও মানসম্মত ওষুধ সরবরাহ করা, যা সরাসরি প্রতিষ্ঠানটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি থেকে সংগ্রহ করে। প্রতিষ্ঠার তিন বছরের মধ্যে মেডইজি সফলভাবে দেড় লাখেরও বেশি ব্যবহারকারীর আস্থা অর্জন করেছে।
ব্যবহারকারীরা খুব সহজেই মেডইজি অ্যাপ, ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজের মাধ্যেমে সেবা নিতে পারেন। অ্যাপটি থেকে পাওয়া যাচ্ছে দেশের শতাধিক অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ভিডিও–পরামর্শের সুবিধা। এখানে ২৩টি ক্যাটাগরির শতাধিক চিকিৎসক আছেন, যাঁরা নিয়মিত রোগীদের সেবা প্রদান করেন।
অ্যাপভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা মানুষের জীবনকে করেছে সহজ ও নির্ভার। এর সঠিক প্রচার এবং প্রসারের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবার নামে অনাকাঙ্ক্ষিত বিড়ম্বনা দূর হবে—এমনটাই আশা মেডইজির মতো সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর।