অসুখী মানুষের এই ১২ লক্ষণের কয়টি আপনার ভেতর আছে?

প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততায় অনেকে এতটাই অভ্যস্ত হয়ে পড়েন যে তিনি আসলে সুখী নাকি অসুখী, সেই হিসেব মেলানোর অবসরটাও মেলে না। একের পর এক সংকট মোকাবিলায়, জীবন সংগ্রামে কেটে যায় জীবন। নীরবে নিভৃতে জীবনের ঘানি টেনে যান। যান্ত্রিক জীবনের নিয়ম আর গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে চলতে আড়ালে চলে যায় দুঃখবোধ। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক দুঃখী মানুষের ১০ লক্ষণ।  

অফিস থেকে ফিরেও আপনার ফুরফুরে বা হালকা লাগে না
ছবি: পেক্সেলস

১. অফিস থেকে ফিরেও ক্লান্ত লাগে

প্রতিদিন অফিস থেকে ফেরার সময় বা সপ্তাহের শেষ দিনে (ধরুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়) অফিস থেকে ফিরেও যদি আপনার ফুরফুরে বা হালকা না লাগে, ক্লান্ত আর বিরক্ত লাগে, বুঝবেন জীবনের ঘানি টানতে টানতে আপনি ক্লান্ত।

২. স্ক্রল করছেন তো করছেনই

উদ্দেশ্যহীনভাবে আপনি যদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ক্রল করতেই থাকেন, বুঝবেন, আপনার আসলে নিজের জীবন নিয়ে খুব একটা আগ্রহ নেই।

৩. বেশি অথবা কম খান

সব খাবারই আপনার কাছে একই রকম স্বাদের মনে হয়

আপনার খাবারের প্রতি বিশেষ আগ্রহ নেই। সব খাবারই আপনার কাছে একই রকম স্বাদের মনে হয়। অথবা খাওয়াই আপনার একমাত্র বিনোদন। খাওয়া ছাড়া আর কোনোকিছুতে বিশেষ আগ্রহ পান না। এই দুই-ই অসুখী, জীবনের প্রতি নিরাসক্ত, হতাশ মানুষের লক্ষণ। হয় আপনি কেবল বেঁচে থাকার জন্য খান, অথবা মাত্রাতিরিক্ত চিনি, তেল-চর্বিযুক্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার খান।

৪. ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী নন

আপনি নিজের ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলতে চান না। কেননা, সেটা সম্পর্কে আপনার ধারণা অস্পষ্ট। ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আপনি অসহায়বোধ করেন।

৫. অভিযোগ আর অভিযোগ

একজন অসুখী মানুষের সবচেয়ে পছন্দের কাজ হলো ক্রমাগত অভিযোগ করতে থাকা আর মানুষের নেতিবাচক দিক নিয়ে কথা বলা। সবকিছুতেই তাঁরা কেবল ঝুঁকি আর সমস্যা দেখেন। তাঁদের সমস্ত  মনোযোগ সমস্যার দিকে, সমাধান নিয়ে তাঁদের বিশেষ আগ্রহ নেই। মনে রাখবেন, অসুখী মানুষ মাত্রই নেতিবাচক আর হতাশ। অল্পতে হতাশ হয়ে পড়াটাও অসুখী মানুষের লক্ষণ।

জীবনসঙ্গীর সঙ্গে দূরত্ব অসুখী হবার অন্যতম প্রধান কারণ

৬. সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্টতার ঘাটতি

একজন অসুখী মানুষের অন্যতম লক্ষণ হলো সঙ্গীর সঙ্গে সুসম্পর্ক না থাকা। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে দূরত্ব একটা মানুষের অসুখী হবার অন্যতম প্রধান কারণ। অনেক ক্ষেত্রেই অসুখী মানুষেরা প্রকৃত অর্থে একা হন। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গেও তাঁদের ঘনিষ্ট সম্পর্ক থাকে না।

৭. সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেন

অসুখী মানুষ দ্বিধা-দ্বন্দ্ব আর সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন। ছোট-বড় যে কোনো সিদ্ধন্ত নিতে দেরি করেন তাঁরা।

৮. বেহুদা খরচ

আপনি অসুখী হলে কোন খাতে কতটুকু খরচ করবেন, সেই ভারসাম্য রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। ‘ইমপালসিভ’ কেনাকাটা, খাওয়াদাওয়াতে দুমদাম খরচ করে পরে আফসোস করেন।

৯. ঘুমের বেহাল দশা

অসুখী মানুষের ৮ ঘণ্টা গভীর ঘুমের কিছুই হয় না ঠিকমতো

অসুখী মানুষের ‘স্লিপ সাইকেল’–এর দশা হয় বেহাল। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া, ওঠা, ৮ ঘণ্টা গভীর ঘুমের কিছুই হয় না ঠিকমতো। অসুখী মানুষের রাতের একটা বড় অংশ কাটে দুশ্চিন্তা করে।

১০. লম্বা, গভীর কথোপকথনে আগ্রহী নন

অসুখী মানুষ নিজেকে গুটিয়ে রাখতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। নিজেকে প্রকাশ করতে চান না। অন্যরাও তাঁর সামনে নিজেকে মেলে ধরতে স্বাচ্ছন্দ্য নন।

১১. নিজের সঙ্গে নেতিবাচক কথোপকথন

অসুখী মানুষ নিজেকে নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগেন। ভাবেন যে, তিনি যথেষ্ট নন। নিজেকে নিয়ে নিজের সঙ্গে তাঁর নেতিবাচক কথোপকথন চলতেই থাকে। ছোট ছোট বিষয় নিয়ে কে কী ভাবল, এসব ভেবে বিচলিত থাকেন।

১২. অল্পতেই রেগে যান, প্রতিক্রিয়া দেখান

একজন অসুখী মানুষ ছোট ছোট বিষয়ে বড় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখান।

সূত্র: সাইকোলজি টুডে