আমাদের মুখের অনুভূতিগুলো ট্রাইজেমিনাল নার্ভ নামের একধরনের স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে প্রবাহিত হয়। কোনো কারণে যদি ট্রাইজেমিনাল নার্ভ অকারণ উদ্দীপ্ত হয়, তবে মাথা ও মুখের পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। একে ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া বলে। এই রোগে মুখের এক পাশে বিদ্যুৎ চমকের মতো তীব্র ব্যথা হয়। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই তা ভালো হয়ে যায়।
এভাবে দিনে ৩০/৪০ থেকে ২০০ বার পর্যন্ত ইলেকট্রিক শকের মতো ব্যথা হতে পারে। খাবার খাওয়ার সময়, দাঁত মাজার সময় এমনকি মুখে হাত লাগলেও এই রোগ তীব্র আকার ধারণ করতে পারে।
আমাদের মুখের অনুভূতিগুলো ট্রাইজেমিনাল নার্ভ নামের একধরনের স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে প্রবাহিত হয়। কোনো কারণে যদি ট্রাইজেমিনাল নার্ভ অকারণ উদ্দীপ্ত হয়, তবে মাথা ও মুখের পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা হয়।
লক্ষণ
মুখের এক পাশে ক্ষণস্থায়ী তীব্র ব্যথা
ব্যথা সাধারণত তীব্র ও বিদ্যুৎ চমকের মতো হয়
মুখে পানি লাগলে, দাঁত মাজলে অথবা খাবার সময় ব্যথার তীব্রতা বাড়ে।
কেন হয়
ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়ার কারণ অজানা। তবে অনেক সময় রক্তনালির জন্মগত ত্রুটি, মস্তিষ্কের টিউমার অথবা মাল্টিপল সেক্লরোসিস নামক রোগের কারণে এ সমস্যা হতে পারে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা
মস্তিষ্কের এমআরআই করে কোনো টিউমার বা রক্তনালির জন্মগত ত্রুটি আছে কি না, তা দেখা যেতে পারে।
মাল্টিপল সেক্লরোসিস রোগ ধারণা করলে প্রয়োজনীয় রক্ত ও সিএসএফ পরীক্ষা করা হয়।
চিকিৎসা
প্রথাগত মাথাব্যথার ওষুধে ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়ার ব্যথা সাধারণত কমে না। কার্বামাজেপিন ও গাবাপেন্টিন জাতীয় ওষুধে ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মস্তিষ্কের রক্তনালি অনেক সময় ট্রাইজেমিনাল নার্ভকে চাপ দিয়ে রাখে। সে ক্ষেত্রে স্থায়ী সমাধান এনে দিতে পারে শল্য চিকিৎসা। মস্তিষ্কের টিউমার বা মাল্টিপল সেক্লরোসিস রোগ থাকলে তার যথাযথ চিকিৎসা করতে হবে।
ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়ার ব্যথা তীব্র ও অসহ্য। এই ব্যথা মানুষের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। ওষুধ সেবনে অনেক সময় এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। শল্য চিকিৎসা লাগে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ডা. নাজমুল হক মুন্না, সহকারী অধ্যাপক, নিউরোলজি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতাল, ঢাকা।