কিডনি সুস্থ রাখতে চাইলে এই ৭ ফল খান

এটা তো সবার জানা, কিডনি আমাদের শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ দূর করে। পাশাপাশি শরীরের পানি ও ইলেকট্রোলাইটের (সোডিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি) ভারসাম্য বজায় রাখতে এর ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া বিশেষ হরমোন উৎপাদনের মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে দারুণ ভূমিকা। শরীরের প্রদাহ নিয়ন্ত্রণেও কিডনির গুরুত্ব অনেক এবং এর ফলে বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ সম্ভব হয়। তাই কিডনি ভালো রাখতেই হবে। হাতের কাছেই বেশ কিছু ফল আছে, যেসবে মিলবে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, ফাইবার বা আঁশ ও পর্যাপ্ত ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। আর এসব ফল খেলে কিডনি থাকবে সুস্থ। জেনে নিন বিস্তারিত।

১. তরমুজ

লাইকোপিন ও পটাশিয়ামসমৃদ্ধ হওয়ায় তরমুজ কিডনির কার্যক্রম সহজতর করে
ছবি: পেক্সেলস

তরমুজে প্রচুর পানি থাকায় শরীরকে ডিহাইড্রেট হতে দেয় না এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। ফলে কিডনির কার্যকারিতা ভালো থাকে। লাইকোপিন ও পটাশিয়ামসমৃদ্ধ হওয়ায় তরমুজ কিডনির কার্যক্রম সহজতর করে। তরমুজে পটাশিয়াম খুব কম থাকে বলে কিডনি রোগীদের জন্য নিরাপদ।

২. লেবু

শরীরে ক্যালসিয়াম অক্সালেট জমে যাওয়া প্রতিরোধ করে লেবু

লেবুতে আছে প্রচুর সাইট্রিক অ্যাসিড। এই অ্যাসিড ঘন ঘন প্রস্রাব হতে সহায়তা করে। আবার ক্যালসিয়াম অক্সালেট জমে যাওয়া প্রতিরোধ করে লেবু। এই ক্যালসিয়াম অক্সালেট কিডনিতে পাথর তৈরি করে। অর্থাৎ কিডনিতে পাথর প্রতিরোধে লেবু বেশ সহায়ক। এ ছাড়া লেবু শরীর থেকে সব ধরনের টক্সিন দূর করতেও কার্যকর।

৩. আনারস

আনারসের ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম শরীরের দূষিত পদার্থ দূর করতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে

আনারসে আছে প্রচুর পানি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা কিডনির কার্যকারিতা ভালো রাখতে সহায়তা করে। আনারসে থাকা ব্রোমেলিন এনজাইম প্রদাহ কমায়, যা কিডনির সঠিক কার্যকারিতার জন্য উপকারী। এ ছাড়া এতে ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম আছে, যা শরীরের দূষিত পদার্থ দূর করতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তবে কিডনির রোগ থাকলে আনারস খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৪. আপেল

আপেলে পটাশিয়াম কম বলে কিডনি রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী

আপেল কিডনির জন্য খুবই উপকারী। এতে প্রচুর ফাইবার বা আঁশ, ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে, যা শরীর থেকে দূষিত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে এবং কিডনির কার্যকারিতা উন্নত করে। আপেলে পটাশিয়াম কম বলে কিডনি রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এ ছাড়া আপেল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা কিডনির সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

৫. ডালিম

আনার, বেদানা বা ডালিম কিডনির প্রদাহ কমায় এবং কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়ক

ডালিম বা বেদানা কিডনির জন্য উপকারী। এতে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, ফাইবার বা আঁশ এবং বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আছে, যা কিডনির প্রদাহ কমায় এবং কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়ক।

৬. পেঁপে

পেঁপে শরীর থেকে টক্সিন বা দূষিত পদার্থ দূর করতে সহায়ক

পেঁপেতে আছে প্রচুর ভিটামিন, অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, ফাইবার বা আঁশ ও প্যাপেইন নামক এনজাইম থাকে, যা কিডনির সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। পেঁপে শরীর থেকে টক্সিন বা দূষিত পদার্থ দূর করতে সহায়ক, হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং প্রদাহ কমায়, যা কিডনির জন্য ভালো।

৭. আঙুর

আঙুরের ফ্ল্যাভোনয়েড ও রেজভেরাট্রল নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কিডনির কোষকে সুরক্ষা দেয়

আঙুরে প্রচুর ফাইবার বা আঁশ ও পানি থাকে, যা কিডনির কার্যকারিতা উন্নত করে। আঙুর শরীর থেকে দূষিত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে এবং প্রদাহ কমায়, যা কিডনির জন্য ভালো। এ ছাড়া এতে ফ্ল্যাভোনয়েড ও রেজভেরাট্রল নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা কিডনির কোষকে সুরক্ষা দেয়। তবে কিডনি রোগে আক্রান্ত বা পটাশিয়াম নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আঙুর খাওয়া উচিত। কারণ, এতে পটাশিয়ামও থাকে।

সূত্র: হেলথ লাইন