প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চা এবং রান্নার মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে মেথির বীজ। গ্রামে শাক হিসেবেও খাওয়া হয় মেথির পাতা। সুগন্ধের জন্য অনেকেরই পছন্দ পাঁচফোড়নের অন্যতম এই উপাদান মেথি। কিছুটা তেতো স্বাদের এই বীজে আছে অসাধারণ সব পুষ্টিগুণ। উচ্চরক্তচাপ কমাতে জাদুকরি ভূমিকা পালন করে মেথি ভেজানো পানি। শুধু তা–ই নয়, নিয়মিত মেথি ভেজানো পানি খেলে শরীরের মেটাবলিজম বা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত হবে। মেটাবলিজম ভালো থাকলে সহজে ওজন বাড়ে না।
ভারতীয় উপমহাদেশে বহু বছর ধরেই মেথির বীজ ভেজানো পানি ডায়াবেটিস, ওজন নিয়ন্ত্রণ ও কোষ্ঠকাঠিন্যে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মেথির বীজে আছে গ্লুকোমেনান নামক ফাইবার, যা খাদ্যের সঙ্গে গ্রহণকৃত চিনি অন্ত্রে শোষণপ্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করে। এ ছাড়া এতে থাকা বিভিন্ন ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড অগ্ন্যাশয়কে ইনসুলিনমুক্ত করতে সাহায্য করে।
মেথির বীজ ভেজানো পানি তৈরি করতে দুই চা–চামচ বীজ ভালোভাবে ধুয়ে এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খালি পেটে এই পানি ছেঁকে অল্প অল্প করে পান করুন।
১. হজমে সাহায্য করে
মেথির বীজে থাকে সহজে দ্রবণীয় ফাইবার যা পরিপাকতন্ত্রে খাবারের চলাচল সহজ করার মাধ্যমে হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়।
২. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
মেথির বীজ রক্তের ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তাই এই পানি নিয়মিত পান করা ডায়বেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
৩. কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়
মেথির বীজে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে যার ফলে কমে হৃদ্রোগের ঝুঁকি।
৪. ওজন কমাতে সাহায্য করে
মেথির বীজ ভেজানো পানিতে থাকা ফাইবারের কারণে অনেকক্ষণ ধরে পেট ভরা অনুভূত হয়, যার ফলে ক্যালরি গ্রহণ কমে ওজন নিয়ন্ত্রণে আসা শুরু করে।
৫. ত্বকের দাগ কমায়
মেথির বীজে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য আছে, যা ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে, ব্রণ বা দাগ কমাতে সাহায্য করে।
৬. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়
মেথির বীজে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
৭. চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে
মেথির বীজ প্রোটিন এবং নিকোটিনিক অ্যাসিডের একটি ভালো উৎস, যা চুলের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। মেথি বীজের পানি পান করলে চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় এবং চুল পড়া কমে।
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস