সকাল থেকে পুষ্পর বাঁ চোখটা লাফাচ্ছে। তখন থেকেই মনে ‘কু’ ডাকছে। তার পরিবারের ওপর কোনো বিপদ আসতে যাচ্ছে না তো? সন্তান স্কুলে যাতায়াতের পথে কোনো বিপদে পড়বে না তো? সারাটা দিন এই ভাবনাতেই আনমনা হয়ে রইলেন তিনি। সন্তান ঠিকঠাক বাড়ি ফেরার পরও স্বস্তি পেলেন না। আর থেকে থেকে বাঁ চোখটা লাফাচ্ছেই। মজার ব্যাপার হলো, বিকেল গড়াতেই মিষ্টির বাক্স নিয়ে হাসিমুখে হাজির হলেন তার স্বামী, তার পদোন্নতি হয়েছে।
পুষ্পর মতো অনেকেরই বিশ্বাস বাঁ চোখ লাফানো কোনো অশুভ লক্ষণ। আসলেই কি তাই? আর কেনই–বা লাফায় চোখ?
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহনুর শারমিন বলেন, ‘চোখের কোনো পেশির হঠাৎ নড়ে ওঠাকেই আমরা চোখ লাফানো বলে থাকি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাধারণ কিছু শারীরবৃত্তীয় কারণেই চোখ লাফানোর মতো অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়ে থাকে। চোখের কিছু সাধারণ রোগবালাইয়েও চোখ লাফাতে পারে। কিছু স্নায়বিক সমস্যাতেও চোখ লাফাতে পারে, তবে সে ক্ষেত্রে রোগের অন্যান্য উপসর্গও দেখা দেয়। আদতে ডান কিংবা বাঁ কোনো চোখ লাফানোর সঙ্গেই শুভ-অশুভ, কল্যাণ-অকল্যাণের কোনো সম্পর্ক নেই।’ তাঁর কাছ থেকেই জেনে নেওয়া যাক চোখ লাফানোর কারণ এবং প্রতিকার।
কেন লাফায় চোখ
চোখের ওপর অতিরিক্ত চাপ, মানসিক চাপ কিংবা অতিরিক্ত চা-কফি পানের কারণে চোখ লাফাতে পারে। বায়ুদূষণের প্রভাবও পড়তে পারে। বাতাসের ধুলাবালু, ময়লা, রাসায়নিক পদার্থ প্রভৃতির সংস্পর্শে আসার কারণে চোখ লাফাতে পারে। চোখে ভাইরাস সংক্রমণ হলেও কারও কারও চোখ লাফায়।
প্রতিকার
চোখের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়লে কমানোর ব্যবস্থা করুন। মুঠোফোন, টেলিভিশন এবং অন্যান্য ডিজিটাল পর্দায় সময় কম ব্যয় করুন। কম আলোতে চোখের কাজ করবেন না। মানসিক চাপ কমাতে চেষ্টা করুন। চা-কফির পরিমাণও কমিয়ে দিন। দূষিত বাতাসের কারণে সমস্যা হচ্ছে বলে মনে হলে রোদচশমা ব্যবহার করতে পারেন।
কখন যাবেন চিকিৎসকের কাছে
চোখ ছাড়া শরীরের অন্য কোনো অংশের পেশি লাফাচ্ছে মনে হলে কিংবা কোনো অংশ দুর্বল হয়ে পড়ছে মনে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চোখ লাফানো ছাড়া চোখে ব্যথা, লাল হয়ে যাওয়া, চুলকানি বা চোখের অন্য কোনো উপসর্গ দেখা দিলে চক্ষুবিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হোন।