মের সমস্যাটি প্রকট হয়েছে করোনা মহামারির সময়
মের সমস্যাটি প্রকট হয়েছে করোনা মহামারির সময়

ঘুম না এলে যা করবেন

ঘুমের সমস্যাটি প্রকট হয়েছে করোনা মহামারির সময়। গবেষণায়ও দেখা গেছে, মানুষের ঘুম কমেছে করোনাকালে। ২০২৩ সালে বিশ্বখ্যাত নেচার সাময়িকীর সায়েন্টেফিক রিপোর্টে বাংলাদেশের মানুষের ঘুম নিয়ে একটি গবেষণা প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ৯ হাজার ৭৩০ জনের ঘুমের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাতে দেখা গেছে, কম সময় ঘুমানো মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। তবে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে হলে পর্যাপ্ত ঘুমের বিকল্প নেই। জেনে নিন কী করলে ভালো ঘুম হবে—

১. শোবার ঘর

ঘুমানোর জন্য শোবার ঘরের আয়োজন যথাযথ হওয়া খুবই জরুরি। শোবার ঘরে চাই নীরবতা, শান্তি আর অন্ধকার। খেয়াল রাখতে হবে যাতে বাইরের আলো না আসে এবং ঘরের সব আলো নিভিয়ে রাখা যায়। আলো ও শব্দের পাশাপাশি শোবার ঘরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাটাও খুব জরুরি। বিছানা-বালিশ আর ঘুমাতে যাওয়ার পোশাক-আশাক যতটা সম্ভব পরিচ্ছন্ন ও আরামদায়ক হওয়া চাই।

২. ঘুমের রুটিন

আসলে ঘুমের রুটিন ঠিক করতে হলে পুরো দিনের রুটিনটাই ঠিকঠাক মেনে চলতে হবে। তার পরও দিন যেভাবেই কাটুক না কেন প্রতি রাতে একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস করাটা খুবই জরুরি। পাশাপাশি প্রতি রাতেই ঘুমাতে যাওয়ার আগে পড়া, হালকা গান শোনা বা এমন নির্দিষ্ট অভ্যাস তৈরি করতে পারলে আরও ভালো। ঘুমানোর এই প্রস্তুতিগুলো মস্তিষ্ককে ঘুমানোর সংকেত পাঠাতে থাকে।

৩. আসক্তি ছাড়ুন, ঠান্ডা থাকুন

ঘুমাতে যাওয়ার জন্য শরীরকে প্রস্তুত করতে হলে অ্যালকোহল এমনকি ক্যাফেইনের মতো উত্তেজনা সৃষ্টিকারী বিষয়গুলোকে এড়িয়ে চলতে হবে। কেননা এগুলোর প্রভাব না কাটিয়ে ঘুমানো যায় না। আর ঘুমানোর জন্য ঘরের তাপমাত্রার মতোই শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারাটা জরুরি। একটু ঠান্ডা ঠান্ডা ঘরে ঘুম ভালো হয়। আর শরীর ঠান্ডা রাখতে রাতে কম ক্যালরিযুক্ত খাবারদাবার খাওয়া ভালো।

৪. ব্যায়াম ও গোসল

প্রতিদিন হালকা ব্যায়ামের অভ্যাস করতে পারা মানসিক চাপ কমায় এবং শরীরে প্রশান্তি আনে। এটা ঘুমের জন্য ভালো। তবে, ব্যায়ামে যেহেতু শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় তাই রাতের বদলে দিনে ব্যায়ামের অভ্যাসটাই ভালো। আর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার তিন-চার ঘণ্টা আগে হালকা গরম পানিতে গোসল করতে পারলে খুবই ভালো। এতে যদিও প্রথমে শরীরের তাপ একটু বাড়ে কিন্তু ধীরে ধীরে তাপ কমে এলে শরীরে প্রশান্তি আসে এবং তা ঘুমাতে সাহায্য করে।

আরও কিছু বিষয়

নিয়মিত এসব অভ্যাস মেনে চলার পাশাপাশি নিজেকে নিজের দেহ-মন সম্পর্কে আরও জানার চেষ্টা করুন। কিছু যোগাসন, মেডিটেশন বা ধ্যান এবং গভীরভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার অভ্যাস রপ্ত করতে পারেন। প্রয়োজনে আলো থেকে রেহাই পেতে চোখ ঢেকে রাখার কাপড়ের আইশেড, বাড়তি শব্দ থেকে রেহাই পেতে কানে ইয়ারপ্লাগ ব্যবহারের মতো টোটকার আশ্রয় নিন। আর সবচেয়ে জরুরি হলো ঘুমাতে যাওয়ার সময় জীবন সম্পর্কে ইতিবাচক চিন্তা করা। সুখ আর আনন্দের স্মৃতি রোমন্থন করা। সুন্দরভাবে সকাল শুরু করে একটা ভালো দিন কাটানোর জন্য নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করা।