ডাবের পানি স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর পানীয়। কিডনি কার্যকর ও সুস্থ রাখতে ডাবের পানির ভূমিকা অপরিসীম। অথচ এই ডাবের পানিই আবার কিডনিজনিত জটিল রোগীদের খেতে মানা করা হয়। এর বৈজ্ঞানিক কারণ অনেকেরই অজানা, যার কারণে সাধারণ মানুষ অনেক সময় ভ্রান্তির মধ্যে পড়েন।
কিডনিতে পাথর হওয়া প্রতিহত করে
শরীরের বর্জ্য পদার্থ নিঃসরণ করে থাকে কিডনি। ডাবের পানি কিডনির মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত খনিজ লবণ (যেমন পটাশিয়াম সাইট্রেট) বের করে দেয়। যার ফলে এসব পদার্থ জমে কিডনিতে পাথর হতে পারে না।
কিডনির রক্ত চলাচলে প্রভাব
ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম থাকে, যা কিডনির রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে, কিডনিকে কার্যকর ও সুস্থ রাখে।
ডাবের পানির ভিটামিন সি
ডাবের পানিতে ভিটামিন সি থাকে। আর ভিটামিন সি কিডনিতে পাথর হতে দেয় না এবং ক্রিয়েটিনিন বেশি থাকলে, তা কমাতে সাহায্য করে।
অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট
ডাবের পানিতে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা কিডনিকে সুস্থ রাখতে ও অধিক কার্যকর রাখতে প্রয়োজনীয়।
কিডনিজনিত জটিলতা থাকলে
কিডনিজনিত জটিল রোগে যাঁরা ভুগছেন, তাঁরা ডাবের পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এই রোগীদের ক্ষেত্রে কিডনির কার্যকারিতা কমে যায়, সে ক্ষেত্রে কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য (যেমন পটাশিয়াম, সাইট্রেট, চর্বি) ঠিকভাবে নিষ্কাশন করতে পারে না। অন্যদিকে ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম বিদ্যমান। কিডনিজনিত জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে রক্তে পটাশিয়াম বাড়তি সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে। শরীরে মাত্রাতিরিক্ত পটাশিয়ামের কারণে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
ডাবের পানি একদিকে যেমন কিডনির জন্য উপকারী, অন্যদিকে অতিরিক্ত গ্রহণ করার ফলে বা যাঁরা ইতিমধ্যে কিডনিজনিত জটিল রোগে ভুগছেন, তাঁদের জন্য মৃত্যুর কারণও হতে পারে। তাই ডাবের পানি পানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
ডা. শিমু আক্তার: সহকারী অধ্যাপক, ফার্মাকোলজি অ্যান্ড থেরাপিউটিকস বিভাগ, জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ