কথায় বলে, সকালে খান রাজার মতো, দুপুরে প্রজার মতো আর রাতে ভিক্ষুকের মতো। অর্থাৎ সকালে ভারী নাশতা করুন। দুপুরে ক্ষুধার্ত হয়ে প্রয়োজনমতো খান। আর রাতে হালকা খাবার খেলেই যথেষ্ট! অথচ আমরা অনেকেই এই নিয়ম উল্টো মানি। ঘুমানোর আগে পেট ভরে ভারী খাবার খাই। আর সেখান থেকে তৈরি হয় ঘুমের সমস্যার পাশাপাশি নানা শারীরিক আর মানসিক জটিলতা।
আমরা অনেকেই সন্ধ্যা সাতটা বাজলে মাকে জিজ্ঞাসা করি, ‘রাতে কী রান্না হচ্ছে?’ তখন মা হয়তো বলেন, ‘তোর বাবার কাছে শোন, রাতে কী খাবে।’ এরপর আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হয়, কী খাওয়া হবে। রান্না শেষে খেতে খেতে রাত ১০টা বা ১১টা। তারপর খাওয়াদাওয়া শেষে ঘুম। একটা ছোট্ট নিয়মে পরিবর্তন এলেই জীবন ইতিবাচকভাবে বদলে যাবে অনেকটাই। সেটা হলো রাতের খাবার সন্ধ্যা সাতটার ভেতর সেরে ফেলা।
আপনি যদি কোনোভাবে রাতের খাবার সন্ধ্যার ভেতর সেরে ফেলতে পারেন, তাহলে আপনি এ সাতটি উপকার পাবেন।
১. রাতের ঘুমের মান বাড়বে। রাতে গভীর ঘুম হবে। একটা শিশুর মতোই ঘুমাতে পারবেন। ভোরে ঘুম থেকে উঠতে সুবিধা হবে। দিনে কাজের সময় বেড়ে যাবে।
২. রাতের খাবার সন্ধ্যার ভেতর সেরে ফেললে, ঘুমানোর অন্তত তিন ঘণ্টা আগে খেতে পারলে তা আপনার শরীরের মেটাবলিজম সিস্টেমকে এমনভাবে প্রভাবিত করবে যে সেটা আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। ওজন কমানোর জন্যও আগে আগে রাতের খাবার সেরে ফেলার কোনো বিকল্প নেই।
৩. হজমপ্রক্রিয়া ভালোভাবে চলবে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগলে তা কমে যাবে। পরিপাক বা গ্যাসের সমস্যা থাকলেও নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
৪. রাতের খাবার আগেই সেরে ফেললে যখন সকালে ঘুম থেকে উঠবেন, তখন আপনার নিজেকে হালকা লাগবে। সকালে ঘুম থেকে সহজেই উঠতে পারবেন। আবার সারা দিন এনার্জিটিক যাবে।
৫. যত দেরি করে রাতের খাবার গ্রহণ করবেন, তত সকালে খালি পেটে আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি আসার ঝুঁকি বাড়বে। ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আগে আগে রাতের খাবার সেরে ফেলতে হবে।
৬. শরীরটা প্রকৃতির নিয়মে দিনে কাজ ও রাতে বিশ্রামের জন্য তৈরি। সে কারণে বেশির ভাগ হরমোন, যেমন কর্টিসল, ইনসুলিন, থাইরক্সিন ইত্যাদি সবচেয়ে বেশি পরিমাণে তৈরি হয় সকালে। অন্যদিকে দিনের শেষভাগে এসে হরমোনের মাত্রা কমতে থাকে। মধ্যরাতে প্রায় শূন্যের কোঠায় চলে আসে। তাই রাতের খাবার আগে আগে সেরে ফেললে তা হরমোনের ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে।
৭. গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা ঘুমানোর অন্তত তিন ঘণ্টা আগে রাতের খাবার সারেন, সেই নারীদের ক্ষেত্রে স্তন ক্যানসার ও পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ১৫ ভাগ কমে।
সূত্র: ফার্ম ইজি