বর্তমানে ত্বকের চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত একটি পদ্ধতি হলো লেজার। লেজার চিকিৎসা নিয়ে অনেকের ভ্রান্ত ধারণা আছে। অনেকেই ভাবেন, ত্বকে লেজার চিকিৎসা করলে পরবর্তী সময়ে ক্যানসার হতে পারে। কারও ধারণা, লেজারের আলো ত্বকের ক্ষতি করে। আবার অনেকের ধারণা, লেজার করলে সব সমস্যার সমাধান হবে স্থায়ীভাবে। তাই লেজার করানোর আগে এ বিষয়ে একটু সম্যক ধারণা থাকা প্রয়োজন।
চর্মবিশেষজ্ঞরা ত্বকের চিকিৎসায় লেজার ব্যবহার করেন। লেজার মূলত একটি আলোকরশ্মি। এর সাহায্যে অবাঞ্ছিত টিস্যুকে নষ্ট করা হয়। যে টিস্যুকে আমরা রাখতে চাই না, সেটিকে কাটাকাটি বা কোনোরকমের ক্ষতি না করে যখন অপসারণ করতে চাই, তখনই সেখানে লেজারের ব্যবহার করা হয়।
আমাদের দেশে অবাঞ্ছিত লোমের ক্ষেত্রে লেজার অনেক বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া ত্বকের গর্ত ঠিক করার জন্য, জন্মগতভাবে রক্তনালির ত্রুটি ঠিক করতে ভাস্কুলার লেজার ব্যবহার করা হয়। ব্রণের সমস্যার জন্যও কখনো লেজার ব্যবহার করা হয়।
এ ছাড়া তিল বা সূর্যের তাপের জন্য শরীরের যেসব সমস্যা হয়, সেগুলো ঠিক করতে লেজারের ব্যবহার করা হয়। শ্বেতীরোগীর চামড়া স্বাভাবিক করার জন্যও লেজার ব্যবহার করা হয়।
লেজার চিকিৎসা যখন দেওয়া হয়, তখন কিছু আলো প্রতিফলিত হয়ে যায়। কিছু আলো আশপাশে ছড়িয়ে যায়, কিছু আলো পরিবহন হয়, কিছু আলো নির্দিষ্ট অঙ্গপ্রত্যঙ্গে গিয়ে লাগে। আমাদের চামড়ায় যে পানি রয়েছে, হিমোগ্লোবিন ও ম্যালানিন আছে, এগুলো লেজারের আলো শোষণ করতে পারে। নির্দিষ্ট অঙ্গে যখন এটি শোষিত হচ্ছে, তখন সেখানে তাপ উৎপন্ন হয়। এভাবেই এটি কোষকে ধ্বংস করে।
তাপ যখন উৎপন্ন হয়, স্বাভাবিকভাবেই আশপাশের ভালো টিস্যুগুলোও তখন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। লেজারের যন্ত্র যদি সঠিক না হয়, ভালো মানের না হয় আবার ব্যবহারকারী দক্ষ না হন, তাহলে কিছু সমস্যা তৈরি হতে পারে। তবে লেজার থেকে ক্যানসার হওয়ার কোনো ধরনের আশঙ্কা নেই। অবাঞ্ছিত লোমের ক্ষেত্রে যদি হরমোনজনিত সমস্যা থাকে, তবে আগে তার চিকিৎসা করাতে হবে।
ডা. জাহেদ পারভেজ, সহযোগী অধ্যাপক, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল