মেনোপজ বা রজঃনিবৃত্তি একজন নারীর জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য পর্যায়। হরমোনের নানা রকম পরিবর্তন ও বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যা এ সময়ে শুরু হয়। যেমন হট ফ্লাশ, হাড়ক্ষয়, স্থূলতা, হৃদ্রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। মেনোপজের সময় স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অবলম্বন করা উচিত। এতে দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমে।
পোস্টমেনোপজাল বা মেনোপজের পর নারীদের জন্য কিছু উপকারী ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যতালিকা এখানে উল্লেখ করা হলো:
ক্যালসিয়াম-সমৃদ্ধ খাবার
ক্যালসিয়াম–সমৃদ্ধ খাবার, যেমন দুগ্ধজাত দ্রব্য (কম চর্বিযুক্ত দুধ, দই, পনির), সবুজ শাকসবজি, টফু, বাদাম এবং অন্য শক্তিশালী খাবার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।
ভিটামিন ডি
খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ খাবার, যেমন ফ্যাটি মাছ (স্যামন, ম্যাকেরেল, টুনা), ডিমের কুসুম, দুগ্ধ ও সিরিয়াল পণ্য এবং প্রয়োজনে পরিপূরক খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করুন।
প্রোটিন
খাবারের মধ্যে চর্বিহীন প্রোটিনের উৎস, যেমন পোলট্রি, মাছ, টফু, বাদাম ও খাদ্যবীজ অন্তর্ভুক্ত করুন।
ফাইবার
প্রচুর পরিমাণে ফাইবার–সমৃদ্ধ খাবার, যেমন পুরো শস্য (বাদামি চাল, কুইনো, পুরো গমের রুটি), ফল, শাকসবজি, লেবু, বাদাম ও বীজ খাদ্যতালিকায় রাখুন।
স্বাস্থ্যকর চর্বি
স্বাস্থ্যকর চর্বি বেছে নিন, যেমন জলপাই তেল, অ্যাভোকাডো, বাদাম, বীজ ও চর্বিযুক্ত মাছ। এই চর্বি প্রদাহ ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড
ডায়েটে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড অন্তর্ভুক্ত করুন; যা প্রদাহ ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। চর্বিযুক্ত মাছ (যেমন স্যামন, সার্ডিন ও ট্রাউট), ফ্ল্যাক্সসিড, চিয়া বীজ ও আখরোট ওমেগা–৩ এর ভালো উত্স।
শর্করা সীমিত করা
চিনিযুক্ত পানীয়, মিষ্টি ও প্রক্রিয়াজাত খাবারের ব্যবহার কমান। পরিবর্তে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে এবং ওজন বৃদ্ধি ও দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে প্রক্রিয়াবিহীন খাবার বেছে নিন।
হাইড্রেশন
হাইড্রেটেড থাকতে, হজমে সহায়তা করতে ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সারা দিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
সংযম ও বৈচিত্র্য
সংযম অনুশীলন ও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি-ঘন খাবার উপভোগ করুন।
এ ছাড়া নিয়মিত শারীরিক সক্রিয়তা, পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনা পোস্টমেনোপজের সময় সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
ডা. শাহজাদা সেলিম, হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়