মাম্পস একটি ভাইরাসজনিত রোগ। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে সংক্রমিত রোগীর কাছ থেকে এটি অন্যজনে ছড়ায়। সব বয়সেই মাম্পস হতে পারে, তবে ৫ থেকে ৯ বছর বয়সী শিশুদের বেশি হয়। বিশেষ করে, স্কুলের শিশুদের একজনের হলে অন্য শিশুদের মধ্যেও মাম্পস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত শিশুকে ১০ দিন আইসোলেশনে রাখতে হবে, না হলে আক্রান্ত শিশুর মাধ্যমে অন্য শিশু বা বড়দের মধ্যে রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
সংক্রমণের সময়
আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পর ১২ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
রোগের লক্ষণ
১. জ্বর।
২. মুখমণ্ডলের এক পাশে বা দুই পাশে কানের নিচে ফুলে যাওয়া।
৩. মাথাব্যথা।
৪. বমি।
৫. সারা শরীর ব্যথা।
৬. গলাব্যথা বা খাবার খাওয়ার সময় কানে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
মাম্পস হলে কী কী জটিলতা হতে পারে
মাম্পস বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজ থেকেই ভালো হয়ে যায়। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে মাম্পস যদি বয়ঃসন্ধির পর হয়, মানে ১২ থেকে ১৯ বছর এই সময়ে হলে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ছেলেশিশুর অণ্ডকোষ আক্রান্ত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে একটি বা দুই অণ্ডকোষে আক্রান্ত হতে পারে, যা থেকে পরে আরও জটিলতার আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া মেয়েদের ক্ষেত্রে ডিম্বাশয় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মাম্পস থেকে মস্তিষ্কে প্রদাহ পর্যন্ত হতে পারে।
চিকিৎসা
প্রচুর তরল জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে।
কুসুম গরম লবণ পানি দিয়ে কুলি করিয়ে মুখের ভেতরটা পরিষ্কার রাখতে হবে।
জ্বর হলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সেবন করা যেতে পারে।
জটিলতা, বিশেষ করে মাথাব্যথা বা অণ্ডকোষে ব্যথা বা পেট ব্যথা হলে শিশুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
প্রতিকার
মাম্পসের টিকা আছে, দুই ডোজ টিকা নিলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ডা. মো. শাহেদুর রহমান: আবাসিক চিকিৎসক, শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল