বিষণ্নতার এই উপসর্গগুলো কি আপনার মধ্যেও আছে

মন খারাপ যে কারোরই হতে পারে, সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। তবে মন খারাপ কখন বিষণ্নতার দিকে যাচ্ছে, তা বোঝাটা জরুরি। কারণ, বিষণ্নতা একটি মানসিক রোগ।

ন খারাপ কখন বিষণ্নতার দিকে যাচ্ছে, তা বোঝাটা জরুরি
ছবি: পেক্সেলস

সাধারণ বিষণ্নতার প্রধান উপসর্গগুলো হচ্ছে—

১.   দিনের বেশির ভাগ সময় মন খারাপ বা বিষণ্ন থাকে। সকালের দিকটায় মন বেশি খারাপ থাকে, সন্ধ্যার দিকে মন অপেক্ষাকৃত ভালো থাকে।

২.   কাজকর্মে উৎসাহ না পাওয়া, বিশেষ করে আগে যেসব কাজে আনন্দ পেতেন, সেসব কাজে আনন্দ না পাওয়া।

৩.  খাবারে অরুচি। খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ না করেও মাসে কমপক্ষে ৫ শতাংশ ওজন কমে যাওয়া।

কাজকর্মের গতি কমে যাওয়া, মস্তিষ্কের স্বাভাবিক গতিতে চিন্তা করার ক্ষমতা হারানো বিষণ্নতার লক্ষণ

৪.   ঘুমের সমস্যা, বিশেষ করে ঘুম কমে যাওয়া কিংবা দুঃস্বপ্ন দেখা। বিষণ্নতায় ভুগলে ঘুমিয়ে তৃপ্তিও হয় না। ঘুম আসতে খুব একটা সমস্যা হয়তো হয় না, তবে সহজেই ঘুম ভেঙে যায়। আরও একটা ব্যর্থ দিন শুরু হলো, এমন হতাশাজনক অনুভূতি নিয়ে সাধারণত খুব ভোরে ঘুম ভেঙে যায়।

৫.   কাজকর্মের গতি কমে যাওয়া, মস্তিষ্কের স্বাভাবিক গতিতে চিন্তা করার ক্ষমতা হারানো।

৬.   কাজ করার উদ্যম বা শক্তি না পাওয়া, অবসন্ন বোধ করা, অল্প কাজ করেই অনেক বেশি ক্লান্তি বোধ করা।

৭.   মনঃসংযোগ কমে যাওয়া এবং দীর্ঘ সময় কাজ বা পড়ালেখায় মনোনিবেশ করতে না পারা।

৮.   ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নিরাশ বোধ করা।

৯.   নিজেকে অকার্যকর ও মূল্যহীন মনে করা; নিজের ও নিজের সঙ্গে সম্পর্কিত সবার দুঃখ-দুর্দশার জন্য নিজেকেই দায়ী মনে হওয়া।

১০. বিষণ্নতার সবচেয়ে বিপজ্জনক উপসর্গ হলো প্রতিনিয়ত নিজের মৃত্যু কামনা করা।

অনেকের এমনটাও মনে হয় যে মরে যাওয়াই এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তির একমাত্র সহজ সমাধান। কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া কিংবা সুপরিকল্পিতভাবে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন কেউ কেউ।

এই তালিকার প্রথম তিনটি উপসর্গের মধ্যে কমপক্ষে একটিসহ মোট পাঁচটি বা তার বেশিসংখ্যক উপসর্গ যদি দুই সপ্তাহ ধরে দিনের বেশির ভাগ সময় কারও মধ্যে দেখা যায়, তাহলে তাঁর বিষণ্নতা আছে বলে ধরে নেওয়া যায়।

শিশুদের মন খারাপের অনুভূতি অবশ্য ভিন্নভাবে প্রকাশ পায়। বিষণ্ন শিশু অধিকাংশ সময় বিরক্ত হয়ে থাকে। তার মধ্যে শিশুসুলভ আনন্দ বা উচ্ছলতার ঘাটতি দেখা যায়।

অধ্যাপক ডা. অভ্র দাশ ভৌমিক, মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ, পরিচালক ও অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা