এই মৌসুমে অনেকে ডেঙ্গুসহ নানা ভাইরাস জ্বরে ভুগছেন। জ্বর বা যেকোনো অসুস্থতা থেকে সেরে উঠতে খাবার বা ডায়েটের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। জ্বরের সময় বা পরে অনেকের কোনো খাবারই খেতে ভালো লাগে না।
বিশেষ করে শিশুরা জ্বরের সময় কিছুই খেতে চায় না। এমনকি জ্বর ভালো হওয়ার পরেও জিভের তিতা স্বাদটা রয়েই যায়।
অসুস্থতার পর দ্রুত স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারে আগের চেয়ে বেশি ক্যালরি লাগে। অসুস্থতার পর ক্ষুধা ও খাবারের প্রতি আগ্রহ ফিরে পেতে এক থেকে দুই সপ্তাহ লাগে।
এ সময় ক্যালরি পূরণ করতে কী খাওয়া উচিত, জেনে নেওয়া যাক—
একসঙ্গে বেশি না খেয়ে খাবারকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিন। অল্প অল্প করে কিছুক্ষণ পর পর খান। আগে, মাঝখানে পানি না খেয়ে খাওয়ার কিছুক্ষণ পর পানি খান।
মুখের রুচি বাড়াতে স্যুপ (লেমন করিয়্যান্ডার স্যুপ, টমেটো স্যুপ, চিকেন স্যুপ, ভেজিটেবল স্যুপ) খুবই কার্যকর। চিকেন স্যুপ যেকোনো তরলের তুলনায় বেশি কার্যকর। কারণ, এতে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড যা অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিইনফ্লামেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
রুচি বাড়াতে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার যেমন আমলকী, আমড়া, লেবু, কমলা, মাল্টা, আনারস, আঙুর, ব্রকলি, গাজর, টমেটো, ক্যাপসিকাম রাখতে হবে।
প্রতি বেলার খাবারের সঙ্গে লেবু, টমেটোর চাটনি রাখা যেতে পারে। এক বা দুটি পুদিনা পাতা মুখে রেখে দিলে বিস্বাদ ভাব অনেকটা কাটবে। রান্নায়ও পুদিনা দিতে পারেন।
খাবার আগে সামান্য আদা চিবিয়ে খেলেও মুখে রুচি বাড়ে। রসুন অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল। এটি ইমিউন সিস্টেমকেও উদ্দীপ্ত করতে পারে। মুরগির স্যুপ বা ঝোলের সঙ্গে রসুন যোগ করুন।
মধু ব্যাকটেরিয়ারোধী ও ইমিউন সিস্টেমকে উদ্দীপ্ত করে। শিশুদের কাশি হলে মধু ভালো উপকার দেয়।
হালকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে দিনে ২ থেকে ৩ বার কুলকুচি করতে পারেন।
জ্বরে কচি ডাবের পানি কার্যকর পানীয়। এতে গ্লুকোজ ও প্রয়োজনীয় ইলেকট্রোলাইট রয়েছে।
সামুদ্রিক মাছ প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন ডি–এর উৎস, যা প্রদাহনিরোধী ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।
তেলেভাজা খাবার বাদ দিয়ে কম মসলাযুক্ত, সহজপাচ্য খাবার খেতে হবে। স্মুদি, মিল্কশেক বা সতেজ অনুভূতি দেয় এমন পানীয় খেতে পারেন। দুধ খেতে না চাইলে দই, পনির বা আইসক্রিম খান।
জিংকযুক্ত খাবার যেমন ডিম, দুধ, পনির, বাদাম, সিড, রেড মিট, অরগ্যান মিট, মাশরুম, পালংশাক মুখের রুচি বাড়ায়। অনেক সময় জিংক ও ভিটামিনের পরিমাণ কমে গেলে ক্ষুধা কমে যায়। মাছের তেল, জিংক ও ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন) সাপ্লিমেন্টগুলো ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে।
নাজনীন এস মৌসুমী, পুষ্টিবিদ, এভারকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা