শিশুর শৈশব রাঙাতে কলকাঠি নাড়ে রঙিন সব খেলনা। সেই সঙ্গে শিশুর শারীরিক আর মানসিক বিকাশ ও ব্যক্তিত্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এসব খেলনা। শিশুর হাতে কেমন খেলনা তুলে দেবেন, তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন অভিভাবকেরা। সেই বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
শিশু যেটাতে আনন্দ পায়, সেটাই তার খেলনা। হতে পারে সেটা শুধু কোনো কাগজের টুকরা। কিন্তু তারপরও শিশুর জন্য খেলনা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, সেটা যেন শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটাতে সহায়তা করে।
ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের হালকা ঝুনঝুন আওয়াজ হয়, এমন খেলনা দিতে পারেন। এক বছর পর্যন্ত শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের উপযোগী নিরাপদ, হালকা রং-বেরঙের খেলনা দিন। হতে পারে কাপড়ের তৈরি নরম খেলনা। বল আর বেলুন দিয়েও খেলতে দিতে পারেন। এক বছরের ওপরের শিশুদের ফুল, ফল, পশুপাখির ছবিযুক্ত বই দিতে পারেন। শব্দ শেখার মজার বই শিশুকে বইয়ের প্রতি আগ্রহী করে তুলবে। আবার খেলার ছলে নানা কিছু শেখাও হয়ে যাবে।
৩ থেকে ৪ বছরের শিশুদের কিনে দিন রংপেনসিল। পাঁচ বছরের শিশুরা খেলতে পারে রঙিন ক্লে দিয়ে। ওদের বিজ্ঞানসামগ্রী, রিমোট কন্ট্রোল যন্ত্র দিতে পারেন। কিনে দিতে পারেন সাইকেল। দলগত খেলা, যেমন দাবা, লুডু, ক্যারম, ব্যাট-বল, টেবিল টেনিস ইত্যাদিও খেলতে পারে পাঁচ বছরের ওপরের শিশু। তবে দেড় বছরের ওপরের শিশুদের মানসিক বিকাশে আপনি নিচের এই পাঁচটি খেলনা দিতে পারেন।
১. স্ট্যাকিং রিংস
এ খেলনাটি শিশুদের ভেতর বেশ জনপ্রিয়। একটা লম্বা বস্তুর ভেতরে বিভিন্ন আকৃতির গোল গোল রিং বসানো হয়। একেকটা রিং একেক রং। এ খেলনাটি আপনার শিশুকে আকৃতি সম্বন্ধে ধারণা দেবে। সেই সঙ্গে সে রঙের সাধারণ ধারণাও পাবে।
২. বিভিন্ন আকৃতির কাঠের খেলনা বা ‘শেপ টয়েস’
এ খেলনাগুলো আপনার শিশুকে খেলতে খেলতেই বৃত্ত, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা দেবে। কোন বস্তু কীভাবে ধরতে হয়, সে ধারণাও পাবে শিশু।
৩. চাকাযুক্ত খেলনা
এ খেলনাগুলো আপনার শিশুর মোটরব্যবস্থা বা যন্ত্রপাতি নিয়ে আগ্রহী করে তুলবে।
৪. বিল্ডিং ব্লকস
এটিও শিশুদের একটি জনপ্রিয় খেলনা। শিশুদের বিকল্প ভাবনা, সৃজনশীলতা ও মোটর বিষয়ে দক্ষতার জন্য এ খেলনাগুলো খুবই কার্যকর। কল্পনাশক্তিকেও জাগ্রত করে। রঙের ধারণা পায়। শিশুরা ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে রোবট, গাড়ি, প্লেন ইত্যাদি বানায়।
৫. অ্যাবাকাস ও বিভিন্ন পাজল–জাতীয় ব্রেনটিজার
অ্যাবাকাস আপনার শিশুর ভেতরে গাণিতিক দক্ষতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। গণিত কীভাবে বাস্তবে কাজে লাগে, সেই শিক্ষা শিশুরা এখান থেকে পায়। স্মৃতিশক্তি, মস্তিষ্কের বিকাশ ও মানসিক বিকাশে পাজল মেলানো খুবই কার্যকর।
সূত্র: গুড হাউসকিপিং