ছোট্ট শিশু রাফসান, ঘুমের সময় নাক দিয়ে শব্দ হয়। এ ছাড়া প্রায়ই কানের সংক্রমণ ও গলাব্যথা লেগে থাকে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরীক্ষায় জানা গেল, ওর অ্যাডিনয়েডের সমস্যা আছে। অ্যাডিনয়েড একটি ছোট্ট গ্রন্থি, যা লসিকা কোষ দিয়ে তৈরি। আমাদের শ্বাসতন্ত্রের উপরিভাগের নাক ও গলার মাঝামাঝি এটি অবস্থিত। এর আরেক নাম ফ্যারিনজিয়াল টনসিল। এটি টনসিলের মতোই আমাদের শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমের একটি অংশ। মুখের ভেতর প্রবেশ করা জীবাণু থেকে প্রাথমিক প্রতিরক্ষা দেয় এটি। শিশুর পাঁচ থেকে সাত বছর বয়স পর্যন্ত অ্যাডিনয়েড বাড়তে থাকে। শিশুরা স্কুল জীবনে পৌঁছানোর পর এটি ছোট হতে শুরু করে এবং কৈশোরে একেবারেই ছোট হয়ে যায়।
কী হয়
সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি জীবাণু ও অ্যালার্জির কারণে অ্যাডিনয়েড অতিরিক্ত বড় হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে শিশুর যে লক্ষণগুলো দেখা যায় তা হলো নাক বন্ধ থাকা, নাকে পানি পড়া, নাকডাকা, নাকের বদলে মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়া, শ্বাস–প্রশ্বাসে ব্যাঘাত এমনকি ঘুমের মধ্যে খানিকক্ষণের জন্য শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে (অবসট্রাকটিভ স্লিপ এপনিয়া)। এ ছাড়া ঘনঘন কান পাকা বা কানের ইনফেকশন এবং সাইনোসাইটিসের সমস্যা হতে পারে।
চিকিৎসা
অল্প সমস্যায় লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করলেই চলে। যেমন নাক বন্ধ থাকলে নাকের স্প্রে। কিছু ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক লাগে। এ ছাড়া প্রচুর পানি ও পুষ্টিকর খাবার খেয়ে ইমিউনিটি ঠিক রাখতে হবে। বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আ্যডেনয়েকটমি বা অস্ত্রোপচার করা লাগতে পারে।
*ডা. লাজিনা শারমিন: সহযোগী অধ্যাপক, শিশুরোগ বিভাগ, ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল