মাঝেমধ্যে বারবার নির্দিষ্ট কিছু খাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা কি জাগে আপনার মধ্যে? এসব খাবারের মধ্যে কোনোটি হতে পারে চিনিযুক্ত, কোনোটি চর্বিযুক্ত, কোনোটি লবণাক্ত। এমন ইচ্ছা আদতে কোনো না কোনো সমস্যার ইঙ্গিত বহন করে। এসবের মধ্যে কয়েকটি খাবার খাওয়ার ইচ্ছা জাগে আবেগ ও হরমোনের ওঠানামার কারণে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব খাবার বারবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা শরীরে কোনো পুষ্টি উপাদানের চরম ঘাটতির লক্ষণ। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কী কারণে কোন কোন খাবার বেশি খেতে ইচ্ছা করে এবং এমন ইচ্ছা দূর করতে কী করণীয়—
মাটি কিংবা চক খেতে ইচ্ছা করা আয়রনের ঘাটতির লক্ষণ। আবার কেউ বারবার চালের ড্রামে হাত ঢুকিয়ে মুঠো ভরে চাল খাচ্ছে, এ দৃশ্য দেখে সবারই অদ্ভুত লাগা স্বাভাবিক। কাউকে চোখের সামনে এমন করতে দেখলে বুঝতে হবে, তার রক্তে আয়রনের ভয়াবহ ঘাটতি আছে।
করণীয়
বারবার কাঁচা চাল, মাটি, চক কিংবা বরফ খেতে ইচ্ছা করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকেরা সিবিসি (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট), সেরাম আয়রন, আয়রন বাইন্ডিং ক্যাপাসিটি, হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তে হিমোগ্লোবিন ও আয়রনের পরিমাণ, অস্বাভাবিক হিমোগ্লোবিনের উপস্থিতি ইত্যাদি নির্ণয় করেন। এ অবস্থায় অবশ্যই চিকিৎসকের নির্দেশিত ওষুধগুলো নিয়মিত খেতে হবে। সঙ্গে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার, যেমন কচুশাক, কাঁচ কলা, কলিজা, পালংশাক, টক দই ইত্যাদি খাওয়া প্রয়োজন।
গ্রীষ্মে বরফশীতল পানি খেতে ইচ্ছা করতেই পারে। কিন্তু শীত-গ্রীষ্ম—যা-ই হোক, সব সময়ই কি আপনার বরফশীতল পানি বা পানীয় খেতে ইচ্ছা করে? এমনকি মাঝেমধ্যে আপনি ফ্রিজ থেকে বের করে বরফ কামড়ান? সাবধান! খুব সম্ভবত আপনার শরীরে আয়রনের ঘাটতি আছে।
করণীয়
আয়রনের ঘাটতিতে করণীয় সম্পর্কে প্রথমে যা বলা হয়েছে, এখানেও তা-ই প্রযোজ্য।
পাস্তা কিংবা রুটির মতো উচ্চ শর্করাযুক্ত খাবার খাওয়ার ঘনঘন ইচ্ছা বেশ কয়েকটি কারণে হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, সঠিক পরিমাণে খাবার না খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া, ক্লান্তি, মানসিক অবসাদ, ইনসুলিন রেজিস্টেন্স ইত্যাদি।
করণীয়
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বার্গার, আলুর চিপস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ইত্যাদি লবণাক্ত খাবার বেশি খেতে ইচ্ছা করা ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালেন্স কিংবা শরীরে সোডিয়াম ক্লোরাইডের (খাওয়ার লবণ) ঘাটতির লক্ষণ।
করণীয়
মাছ ও টমেটো বেশি করে খেতে হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অ্যালাইভ ওয়েল নিউট্রিশন ডটকম