গর্ভকালীন সময়ে মলত্যাগের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো বিপত্তি প্রতিনিয়ত দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে করণীয় কী?
গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন ও শারীরিক গঠনের তারতম্য। এ সময় প্রজেস্টেরন নামক হরমোনটি উচ্চমাত্রায় বৃদ্ধি পায়; যার কারণে অন্ত্রের পেশি শিথিল হয়ে যায় এবং তার প্রভাবে হজমশক্তি ধীরগতিতে কাজ করে। এ ছাড়া এ সময় নিয়মিত আয়রন সাপ্লিমেন্ট সেবনও কোষ্ঠকাঠিন্যের একটি বড় কারণ। গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই জরায়ুর আকার-আকৃতি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বৃহদন্ত্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করে; তাতে মলত্যাগের বেগ ধীর হয়ে যায়।
পেটে অস্বস্তি, পেট ফুলে যাওয়া, ক্ষুধামান্দ্য ভাব, শক্ত মলত্যাগ—এগুলো কোষ্ঠকাঠিন্যের উপসর্গ।
এ ছাড়া দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে দেখা দেয় পাইলস। মলদ্বারে রক্তক্ষরণও হতে পারে।
১. বেশি করে আঁশযুক্ত খাবার যেমন সবুজ শাকসবজি, ফলমূল; ফাইবার–জাতীয় খাবার (শস্যাদি); দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খেতে হবে।
বলা হয়, এক গ্লাস দুধে একটি সম্পূর্ণ খাবারের পুষ্টি ও গুণাগুণ বিদ্যমান। তাই প্রতি রাতে খাবারের তালিকায় এক গ্লাস দুধ বা এক বাটি টক দইয়ের উপস্থিতি যেমন পুষ্টির জোগান দেয়, তেমনি তা হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং মলত্যাগে সাহায্য করে।
২. সঠিক পন্থা অবলম্বন করে দিনে ৩-৪ লিটার পানি পান করতে হবে। অর্থাৎ পানি পান করার সময় চেয়ারে বা যে কোনো বসার স্থানে বসে পানি পান করতে হবে। যেন শরীরের সব অঙ্গে তা পৌঁছায় এবং যথা নিয়মে কাজ করতে পারে।
৩. সপ্তাহে ৪-৫ দিন ২০-৩০ মিনিট করে হাঁটাহাঁটি এবং যোগব্যায়াম করতে হবে (চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী)।
৪. প্রতিদিন মলত্যাগের অভ্যাস করতে হবে।
এসব পন্থা অবলম্বন করেও যদি গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য নির্মূল না হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মল নরমকারী ওষুধ সেবন করতে হবে এবং এই ওষুধের পরিমাণও চিকিৎসকই নির্ধারণ করে দেবেন।
লেখক: ডা. সুমাইয়া বি. জাহান, রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার
গাইনি ও প্রসূতি বিভাগ
স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড
Photo by Milan Vekariya, pexels