অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের পর অনেক নারীই পিঠের নিচের অংশে ব্যথায় ভোগেন। একই সঙ্গে সেলাই ও অস্ত্রোপচারের ব্যথা তো থাকেই। সাধারণত কিছুদিন পর এসব ব্যথা–বেদনা চলে যায় এবং আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা সম্ভব। তবে অনেক সময় ব্যথা অস্বাভাবিক ও দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে।
অস্ত্রোপচারের জন্য ইনজেকশন (অ্যানেসথেসিয়া বা অবেদন) দেওয়ার পর থেকে অনেক সময় ব্যথা শুরু হয়। তবে ইনজেকশন ব্যথার জন্য দায়ী নয়। মূলত কোমরের মাংসপেশি, লিগামেন্ট ও লাম্বার লাইনের স্বাভাবিক বক্রতা বেড়ে যাওয়ায় এই ব্যথা হতে পারে। আবার অবেদন ইনজেকশনের পরবর্তী প্রভাব থেকে ব্যথা হতে পারে। ইনজেকশন দেওয়ার পর সেরিব্রোস্পাইনাল তরল অল্প পরিমাণে লিক করতে থাকে। এতে প্রচণ্ড মাথাব্যথা ও ঘাড়ব্যথা সৃষ্টি করে, বিশেষ করে প্রসূতি দীর্ঘ সময় যদি বসে অথবা দাঁড়িয়ে থাকেন। তিনি শুয়ে পড়লে ব্যথা কমে যায় বলে মনে হয়।
অ্যানেসথেসিয়ার প্রভাব চলে যেতে শুরু করলে প্রসবের অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে পিঠ বা কোমরের ব্যথা শুরু হয়। তিন থেকে ছয় ঘণ্টা পর অবেদন ইনজেকশন দেওয়া অংশটিতে ব্যথা হতে শুরু করে। সেরিব্রোস্পাইনাল তরল ফুটো হওয়ার ফলে মাথাব্যথা ও ঘাড়ব্যথা সাধারণত প্রসবের ১২ ঘণ্টা পর বা শিশুর জন্মের ৩ থেকে ৪ দিন পর শুরু হয়।
অবেদনের কারণে মেরুদণ্ডে হওয়া ব্যথা স্বাভাবিকভাবে এক সপ্তাহের মধ্যে কমার কথা। কারও কারও ক্ষেত্রে ব্যথা এক মাস পর্যন্ত থাকে। এর প্রাথমিক কারণ হলো ইনজেকশন প্রবেশের কারণে আঘাত লাগা। অনেক সময় মাথাব্যথা ও ঘাড়ব্যথা অসহনীয় হয়ে উঠতে পারে।
একজন ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়ামের ফলে দ্রুত উপশম মিলতে পারে।
সঠিকভাবে ঘুমানো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পিঠের ব্যথা ও প্রসবের যন্ত্রণা থেকে আরোগ্য লাভে সঠিক ধরনের অবস্থান অবলম্বন দরকার। বিছানা ও তোশক যেন সমতল হয় এবং খুব নরম না হয়, তা নিশ্চিত করুন।
গরম ও ঠান্ডা উষ্ণ চিকিৎসার সঙ্গে শীতল চাপ অদলবদল করে প্রয়োগ করলে পেশিগুলো শিথিল এবং ব্যথার জায়গায় রক্তসঞ্চালন বাড়াতে সহায়তা করে।
মো. সাইদুর রহমান, চিফ কনসালট্যান্ট, রিঅ্যাকটিভ ফিজিওথেরাপি সেন্টার, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ অ্যাভিনিউ, ঢাকা