দাঁত তোলার আগে সতর্কতা

নানা কারণে একটা-দুটো দাঁত ফেলে দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। যেমন কিশোর বয়সে বা অনেক সময় প্রাপ্তবয়স্কদের আক্কেলদাঁত ফেলতে হয়। অত্যধিক ক্ষয়, সংক্রমণের কারণে দাঁত তোলার প্রয়োজন হতে পারে।

যাঁরা আঁকাবাঁকা দাঁতের চিকিৎসায় ব্রেসেস পরেন, তাঁদেরও অনেক ক্ষেত্রে দাঁত তুলে ফেলতে হয়। কেমোথেরাপি নিচ্ছেন বা কোনো অঙ্গ প্রতিস্থাপন করতে যাচ্ছেন, তাঁদের মুখের সুস্থতায় দাঁত অপসারণ করতে হতে পারে।

দাঁত তোলার প্রক্রিয়াটি সহজ মনে করা হলেও আসলে এটি একধরনের সার্জারি বা শল্যচিকিৎসা। বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত বিষয় এর সঙ্গে জড়িত। সতর্ক না থাকলে দাঁত তোলা থেকেও বিপদ হতে পারে।

দাঁত তোলার আগে

  • দাঁতের এক্স-রে সঙ্গে রাখতে হবে।

  • কোনো ওষুধ বা ভিটামিন সেবন করলে তা আপনার দন্তচিকিৎসককে জানাতে ভুলবেন না। যেমন হাড় ক্ষয়ের জন্য বিসফোসফোনেট–জাতীয় ওষুধ খেলে সেটি জানাবেন। কারণ, এই ওষুধ গ্রহণের আগেই দাঁত তোলা উচিত। নয়তো চোয়ালের হাড় ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

  • হার্ট বা স্ট্রোকের রোগীরা অ্যাসপিরিন বা ক্লোপিডোগ্রেল-জাতীয় ওষুধ দীর্ঘদিন ধরে সেবন করলে চিকিৎসকে জানাতে হবে।

  • দাঁত তোলার চার দিন আগে এ ওষুধগুলো বন্ধ করতে হবে।

  • যাঁদের ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাঁদের এ দুটি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, দেখে নিন।

  • দন্তচিকিৎসককে আরও কিছু বিষয় জানানো জরুরি। হার্টের জন্মগত ত্রুটি, লিভারের রোগ, থাইরয়েড রোগ, মূত্রাশয়ের রোগ, কৃত্রিম জয়েন্ট, হার্টের ভালভের সমস্যা, অ্যাড্রিনাল রোগ, রোগ প্রতিরোধক্ষমতার দুর্বলতা, এন্ডোকার্ডাইটিসের ইতিহাস আছে কি না, এগুলো জানাতে হবে।

  • কিডনি রোগ থাকলে ব্যথানাশকের বিষয়ে চিকিৎসককে জিজ্ঞেস করুন।

  • দাঁত তোলার আগে চিকিৎসককে নিশ্চিত হতে হবে যে আপনার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।

  • দাঁত তোলার আগে ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।

  • দাঁত তোলার সময় কাউকে সঙ্গে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসুন।

দাঁত তোলার পর

  • লোকাল অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার করে দাঁত তোলা হলে সেদিনই স্বাভাবিক খাবার খেতে বলা হয়। তবে জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া প্রয়োজন হলে দাঁত তোলার ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা আগে খাবার বা পানীয় থেকে বিরত থাকতে হবে।

  • জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার করলে আপনার শারীরিক অবস্থা জানতে কয়েকটি পরীক্ষার প্রয়োজন হবে।

ডা. শারমীন জামান, ওরাল অ্যান্ড ডেন্টাল সার্জন, ফরাজী ডেন্টাল হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা