তেল ছাড়া পরোটা কি স্বাস্থ্যকর?

রেস্তোরাঁয় নাশতা করতে গিয়ে স্বাস্থ্যসচেতন অনেকেই ‘তেল ছাড়া পরোটা’ তৈরির ফরমাশ দেন। সাধারণভাবে মনে হতে পারে, ‘তেল ছাড়া পরোটা’ বেশ স্বাস্থ্যকর খাবার, যা খেলে তেলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচা যাবে। আসলেই কি তা–ই? জেনে নেওয়া যাক ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী কী বলেন।

তেল ছাড়া পরোটায় ডো তৈরির সময় একটু বেশি পরিমাণেই তেলের ব্যবহার হয়।
ছবি : প্রথম আলো

‘তেল ছাড়া পরোটা’ তেল ছাড়া ভাজা হলেও ডো তৈরির সময় কিন্তু তেল দেওয়া হয় ঠিকই। এমনকি সাধারণ পরোটার চেয়ে একটু বেশিই তেল দেওয়া হয়। যেহেতু ভাজার সময় তেল ব্যবহার করা হবে না, তাই ডো তৈরিতে বেশি করে তেল দেওয়া না হলে পরোটা সেঁকার সময় নিচের দিকে লেগে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। সেই সমস্যা এড়াতেই ডো তৈরির সময় অনেকটা তেলের ব্যবহার করা হয়।

একেবারেই কি কোনো লাভ নেই?

তেলে ভাজা হলে পরোটায় যতটা তেল থাকে, তেল ছাড়া তৈরি করা হলে তার চেয়ে তেলের পরিমাণ সামান্য কম থাকে, এটা ঠিক। অর্থাৎ, মোট ক্যালরির পরিমাণও সামান্য কম থাকে। ঘিয়ে ভাজা পরোটার চেয়ে ‘তেল ছাড়া পরোটা’য় ক্যালরির পরিমাণ কম। তবে সবদিক বিবেচনায় ‘তেল ছাড়া পরোটা’কে বিজ্ঞানসম্মতভাবে ‘স্বাস্থ্যকর’ খাবার মনে করার সুযোগ নেই। কারণ, এতে পুরু ময়দার স্তর তো থাকছেই।

ময়দায় ক্ষতি কী?

ময়দা হলো পরিশোধিত (রিফাইনড) খাদ্য উপকরণ, যা শর্করার উৎস। এতে আঁশ নেই। ময়দার তৈরি পরোটা খেলে হুট করে রক্তের চিনির মাত্রা বাড়ে, আবার হুট করে কমেও যায়। তাই ক্ষুধাও পেয়ে যায় খানিকক্ষণ পরই। এমনিতেও ক্যালরি বেশি থাকায় ময়দার তৈরি পরোটা খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা মুশকিল। তা ছাড়া পরোটা খেলে রক্তে চর্বি (ট্রাইগ্লিসারাইড) বাড়ারও ঝুঁকি থাকে। তেল ছাড়াই হোক, আর তেলে ভাজাই হোক, পরোটা স্বাস্থ্যকর খাবার নয়।

আটার রুটিই ভালো

আটাও শর্করার উৎস। কিন্তু তা আবার ময়দার মতো অতটা পরিশোধিত নয়। আটায় কিছুটা আঁশ থাকে। তাই ময়দার চেয়ে আটা বেশি স্বাস্থ্যকর। আটার তৈরি রুটি খেলে রক্তে চিনির মাত্রা তুলনামূলক ধীরে বাড়ে। আর রুটি পাতলা হয় বলে এতে ক্যালরিও থাকে পরোটার চেয়ে কম। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে রুটি খাওয়াই ভালো।

অবশ্য সবচেয়ে ভালো হলো লাল আটা বা ভুসিসমেত আটা। এতে আঁশের পরিমাণ থাকে আরও বেশি। এই আটার রুটি খেলে রক্তে চিনির মাত্রা হুট করে বাড়বে না, কমবেও না। সহজে ক্ষুধাও লাগবে না। ওজনও থাকবে নিয়ন্ত্রণে, যদি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া না হয়। তা ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকিও কমবে।