আমাদের শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের স্বাভাবিক মাত্রা হচ্ছে পুরুষদের জন্য ৩ দশমিক ৪ থেকে ৭ মিলিগ্রাম/ডিএল এবং মেয়েদের জন্য ২ দশমিক ৪ থেকে ৫ দশমিক ৭ মিলিগ্রাম/ডিএল। এই মাত্রা অতিক্রম করলে তাকে হাইপার ইউরিসেমিয়া বলা হয়। ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে সন্ধিতে প্রদাহ ও ব্যথা হতে পারে। একে গাউট বা গেঁটেবাতও বলে।
বয়োজ্যেষ্ঠ ও কিডনি রোগীদের মধ্যে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ার প্রবণতা বেশি। কিন্তু আজকাল কম বয়সীদের মধ্যেও এই অ্যাসিড বাড়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এর অন্যতম কারণ স্থূলতা ও অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস।
● আমিষজাতীয় ও পিউরিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেলে। কিডনি পর্যাপ্ত ইউরিক অ্যাসিড শরীর থেকে নিষ্কাশন করতে না পারলে।
● ইউরিক অ্যাসিড বিপাকের এনজাইমে ঘাটতি থাকলে। ওজন বেশি হলে। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস।
● ধূমপান বা কোনো নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ।
● বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়।
ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে হার্টে অসুখ ও কিডনিতে পাথর হতে পারে। বিশেষ করে পায়ের সন্ধিগুলো লাল হয়ে ফুলতে পারে।
হার্টে অসুখ ও কিডনিতে পাথর হতে পারে। বিশেষ করে পায়ের সন্ধিগুলো লাল হয়ে ফুলতে পারে। গোড়ালিতে ব্যথা হতে পারে, সকালে ঘুম থেকে উঠে হাঁটা শুরু করলে কাঁটা ফোটার মতো অনুভূতি হতে পারে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ইউরিক অ্যাসিড কমাতে ওষুধের দরকার হয় না। তবে সন্ধি ফুলে লাল হয়ে গেলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ইউরিক অ্যাসিড একটি নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি থাকলে, কিডনি রোগ হলে চিকিৎসক ওষুধ দেবেন। পাশাপাশি একজন বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে খাদ্যাভ্যাস গড়তে হবে।
● কলিজা, মগজ, মাছের ডিম, সামুদ্রিক মাছ, গরু-খাসির মাংস, হাঁস বা ভেড়ার মাংস, ফুসফুস, মাশরুম, হাঁস-মুরগির চামড়া, কাঁকড়া, সামুদ্রিক শুঁটকি, ইলিশ মাছ, মাংসের স্যুপ।
● মসুর, মাষকলাই ও বুটের ডাল; বাদাম, শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, মটরশুঁটি।
● শতমূলী, পুঁইশাক, পালংশাক, সরিষার শাক, মুলাশাক, পাটশাক, কচুর শাক, কচুরলতি।
● ক্রুসিফেরি গোত্রের উদ্ভিদ—মুলা, ঢ্যাঁড়স, ওলকপি, টমেটো, ব্রকলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, শজনে, বেগুন।
● অতিরিক্ত লবণযুক্ত (প্যাকেটজাত খাবার), চর্বিযুক্ত তেলে ভাজা খাবার, ইস্ট বা ইস্টমিশ্রিত খাবার।
● প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে মিঠা পানির মাছ ও চামড়া ছাড়া মুরগির মাংস, ডিম, মুগডাল, টক দই, দুধ খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে।
● লালশাক, ডাঁটাশাক, লাউশাক, কলমিশাক, কুমড়া শাক, সবুজ শাক। কাঁকরোল, পেঁপে, ধুন্দুল, চিচিঙ্গা, পটোল, করলা, লাউ, চালকুমড়া ইত্যাদি।
একই সঙ্গে সব ধরনের মৌসুমি ফল খেতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
মো. ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল