শরীরচর্চা ধরে রাখতে চান? এই কাজগুলো করুন

‘নিউ ইয়ার রেজল্যুশন’-এর বড় একটি অংশজুড়ে থাকে শরীরচর্চা। বিগত বছরের অনিয়ম পাশে সরিয়ে রেখে নতুন বছর থেকে শরীরচর্চায় মনোযোগ দিতে চান অনেকেই। সে লক্ষ্যে অনেকে শুরু করেন জিমযাত্রা। কিন্তু শুরু করা যত সহজ, ধরে রাখা তার চেয়ে বহুগুণ কঠিন। যে কারণে নতুন বছরে জিমে যোগ দেওয়া লোকজনের ৬০ ভাগই ২০ দিনের মধ্যে ঝরে পড়েন। নতুন বছরের অন্য সব পরিকল্পনা থেকে শরীরচর্চা অনেক আলাদা। শরীরচর্চায় শুধু শরীর নয়, মনের ওপরেও চাপ পড়ে। সেই সঙ্গে শরীরচর্চার পর অন্য কোনো কাজে মনোযোগ দেওয়াও হয়ে পড়ে কষ্টসাধ্য। যে কারণে এক-দুই সপ্তাহ পরই আস্তে আস্তে শরীরচর্চা থেকে নিজেদের নাম সরিয়ে নেন অনেকে। শরীরচর্চা করতে করতে যদি মনে হয় আর পারছেন না, তবে এই টিপসগুলো অনুসরণ করে দেখতে পারেন...

ব্যায়ামকে চাপ হিসেবে নিলেই সমস্যা

ব্যায়াম উপভোগ করুন

নতুন নতুন জিমে যোগদান করা অনেকের কাছেই শরীরচর্চা শুধুই মেদ ঝরানোর একটি উপায়মাত্র। কিন্তু শরীরচর্চা শুধু মেদ ঝরায় না, বরং মনকে সুস্থও রাখে। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষই যেহেতু জিমকে মনে করেন মেদ ঝরানোর কারখানা, সেহেতু শরীরচর্চাকে পুরোপুরি উপভোগ করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। আর কোনো কাজ যখন উপভোগের চেয়ে প্রয়োজন বলে বেশি মনে হবে, তখন সেই কাজের পূর্ণ সুবিধা পাওয়াও অসম্ভব হয়ে পড়ে।
যে কারণে জিমে যেতে ইচ্ছে না করলে হাঁটুন, দৌড়ান, কিংবা সাইক্লিং করুন। যাতে শরীরচর্চার ওপর মন বিষিয়ে না যায়, সেটাই করুন। শরীরচর্চাকে উপভোগ করতে পারলে তা থেকে উপকারও পাওয়া সম্ভব হবে দ্রুত।

নিয়মিত হাঁটতে হবে

হাঁটুন

শরীরচর্চার ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময়েই মানুষ হাঁটাকে বাদ রাখে। অনেকের জন্যই হাঁটা শুধু চলাচলের একটা উপায়মাত্র। কিন্তু হাঁটা যে শরীরচর্চার অন্যতম বড় অনুষঙ্গ হতে পারে, অনেকেই তা ভুলে যান। অনেকেই আছেন দিনের শুরু থেকে শেষ, ডেস্কে বসে কাটান। পরে শরীর নড়াচড়ার জন্য যখন জিমে যান, পেশিগুলো এতটাই আড়ষ্ট হয়ে থাকে যে সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। যে কারণে জিমে যোগ দিন বা না দিন, প্রত্যেকেরই উচিত নিয়মিত হাঁটাচলা করা।
মধ্যাহ্নভোজের পর, কিংবা ছোট কোন পথ পাড়ি দিতে যানবাহনের বদলে হাঁটার অভ্যাস করুন, শরীরে জমে থাকা মেদ ঝরাতে তখন আর এত কষ্ট করতে হবে না।

প্রতিযোগিতায় যোগ দিন

পুরস্কারের আকর্ষণ কাজের গতি বাড়ায়

বেশির ভাগ জিমেই সদস্যদের জন্য নানা প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা থাকে। শুরু থেকেই সেসব প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার চেষ্টা করুন। গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিযোগিতায় অংশ নিলে প্রতিযোগীদের মনোবল যেমন চাঙা থাকে, তেমনই পুরস্কারের লোভে কাজের গতিও বেড়ে যায়। পুরস্কার জিতুন বা না জিতুন, অংশ নিয়ে দিনশেষে উপকার হচ্ছেন কিন্তু আপনারই।

বন্ধুকে নিয়ে যোগ দিন

বন্ধু পাশে থাকলে বিরক্তিকর কাজও হয়ে ওঠে আনন্দময়

জিমে গিয়ে একা একা পরিশ্রম করতে অনেকেরই একঘেয়ে লাগে। সঙ্গীর অভাবে যেকোনো আনন্দময় জিনিসও হয়ে উঠতে পারে বিরক্তিকর। কিন্তু দুই একজন কাছের বন্ধু বা পুরো দল মিলে একসঙ্গে শরীরচর্চা করলে মন যেমন উৎফুল্ল থাকবে, তেমনই শরীরচর্চাকেও আলাদা কোনো কাজ বলে মনে হবে না। বরং মনে হবে বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ করার আরেকটি মুহূর্ত।

শরীরচর্চায় বৈচিত্র্য আনুন

প্রতিদিন শরীরের ওপর এক রকম চাপ দেবেন না

প্রতিদিন একই খাবার খেতে আপনার কেমন লাগে? নিশ্চয়ই ভালো লাগে না। তেমনই প্রতিদিন একই শরীরচর্চা করতেও ভালো লাগবে না। যে কারণে প্রতিদিন একই ধরনের শরীরচর্চা থেকে দূরে থাকুন। কোনো দিন জিমে বেশি ঘাম ঝরালে পরের দিন এমন কোনো শরীরচর্চা করুন, যাতে শরীরের ওপর চাপ কম পড়ে। ঘুরেফিরে সব ধরনের শরীরচর্চা করলে শরীর যেমন ভালো থাকবে, তেমনি শরীরচর্চার ওপর বিরক্তিও আসবে না।

স্ট্রেচ করুন

স্ট্রেচিং না করলে সহজেই ভেঙে পরতে পারে শরীর

শরীরচর্চায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো স্ট্রেচিং। প্রতিদিন আমাদের শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মাসলগুলোও আড়ষ্ট হয়ে যায়। সেই মুহূর্তে শরীরচর্চায় যোগ দিলে মাসল পুলের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। এমনকি দ্রুত ক্লান্তি ভর করতে পারে শরীরে। যে কারণে প্রতিদিন শরীরচর্চার আগে অন্তত পাঁচ মিনিট স্ট্রেচ করে নিন। এতে যেমন শরীর বড় ওয়ার্ক-আউটের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে, তেমনই শরীরে দ্রুত ক্লান্তিও ভর করতে পারে না।