ভালো থাকুন

বিসিজি টিকা কখন দেবেন

নবজাতক শিশুকে টিকাদান
প্রতীকী ছবি

শিশুকে যক্ষ্মারোগ থেকে সুরক্ষা দেওয়ার একমাত্র হাতিয়ার বিসিজি (ব্যাসিলি কালমেটি-গুরেন) টিকা। পৃথিবীব্যাপী প্রায় ১০০ দেশে এক বছরে কম বয়সী শিশু ও ছোটদের এ টিকা দেওয়া হয়। তবে এ বিষয়ে কিছু জিনিস জেনে রাখা ভালো।

  • বিসিজি টিকাদান শিশুর শরীরে যক্ষ্মারোগ হওয়া প্রতিরোধ করে না। টিকা দিলেই যে জীবনে যক্ষ্মা হবে না, বিষয়টি তেমন নয়। তবে শিশুর সারা দেহে ছড়িয়ে পড়া যক্ষ্মা (মিলিয়ারি টিউবারকিউলোসিস) ও মস্তিষ্কের যক্ষ্মারোগের মতো জীবনসংহারক যক্ষ্মা থেকে শিশুকে সুরক্ষা দেয়।

  • সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, বিসিজি টিকা শিশুর প্রাথমিক যক্ষ্মারোগ প্রতিরোধে কোনো ভূমিকা না রাখলেও উপরে উল্লেখিত মারাত্মক দুই ধরনের যক্ষ্মায় প্রায় ৮০% কার্যকর ভূমিকা রাখে। তা ছাড়া শিশুর বয়স, পুষ্টি অবস্থা ও অন্যান্য ফ্যাক্টর বা অবস্থার ওপর নির্ভর করে ফুসফুসের যক্ষ্মার ক্ষেত্রেও প্রায় ৫০% ক্ষেত্রে প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে তোলে। এভাবে দেখা যায়, বিসিজি টিকাদানের মাধ্যমে ক্ষতিকর যক্ষ্মা (অ্যাকটিভ) ও মৃত্যুর হাত থেকে শিশু রক্ষা পায়।

 টিকাদান সূচি

  • সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) শিডিউল মেনে শিশুকে বিসিজি টিকাদান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরপর যত শিগগির সম্ভব, বিশেষত দুই সপ্তাহের মধ্যে দেওয়া উচিত।

  • তবে কোনো কারণে যদি দুই সপ্তাহের মধ্যে বিসিজি দেওয়া না যায়, তবে ওই শিশুকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত এ টিকা দেওয়া যায়।

  • সব বয়সের জন্য এ টিকার ডোজ ০.১ মিলি। এটা বাঁ বাহুতে দেওয়া হয়। বিসিজি টিকাদানের স্থানে ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে প্রথমে ফোড়া ও পরে ঘা দেখা দেয়। যদি কাউকে বিসিজি টিকাদানের ১২ সপ্তাহ পরেও এই স্থানীয় প্রতিক্রিয়া দেখা না যায়, তবে সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয়বার বিসিজি টিকা দেওয়া উচিত।

প্রতিক্রিয়া ও ব্যবহার

  • বিসিজি টিকাদান থেকে প্রতিক্রিয়া খুবই কম। কখনো স্থানীয়ভাবে কিছু গ্ল্যান্ড ফুলে যায়, যা আপনাআপনি কমে যায় এবং সাধারণভাবে চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না।

  • বিসিজি ভ্যাকসিন ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে রাখা হয়। তবে তৈরি করার চার ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই ব্যবহার করে ফেলতে হবে।

অন্যান্য উপকারিতা

যক্ষ্মা ছাড়াও বিসিজি টিকা কুষ্ঠরোগের বিরুদ্ধেও কিছু প্রতিরোধমূলক ভূমিকা পালন করে। এ টিকা শিশু বয়সের নেফ্রোটিক সিনড্রোম ও মূত্রথলির ক্যানসারের বিরুদ্ধেও কিছু প্রতিরোধমূলক ভূমিকা পালন করে।

অধ্যাপক প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল