অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ করলে তা সরাসরি শরীরে জমতে থাকে। ওজন হু হু করে বেড়ে যায়। অতিরিক্ত ওজন সঙ্গে নিয়ে আসে হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও বেশ কিছু ক্যানসার।
মিষ্টি ভালোবাসেন না, এমন মানুষের সংখ্যা কম। কিন্তু মিষ্টি হলো মানুষের ১ নম্বর শত্রু—এ কথাও সবার জানা। এ ক্ষেত্রে জানা উচিত মুক্ত চিনি বা ফ্রি সুগার কী? ফ্রি সুগার হলো কোষ থেকে বাইরে থাকা মিষ্টি, খাদ্যের সঙ্গে মেশানো মিষ্টি, শরবতে ঢেলে দেওয়া মিষ্টি। ফ্রি সুগার মিষ্টির আধুনিক নাম। বিভিন্ন খাদ্যে মিশে আছে এই মুক্ত চিনি। যেমন কেক, পেস্ট্রি, বিস্কুট, চকলেট, জুস ইত্যাদি। এই কাতারে আছে আমাদের সবচেয়ে পরিচিত রসগোল্লা, চমচম, জিলাপি, দই, সন্দেশ, রসমালাই প্রভৃতিও।
ফ্রি সুগার থেকে ৫ শতাংশের বেশি ক্যালরি নেওয়া স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বয়স্ক ব্যক্তিরা ৩০ গ্রামের বেশি ফ্রি সুগার দিনে নেবেন না। ৭ থেকে ১০ বছর বয়সের শিশুর ২৪ গ্রামের বেশি ফ্রি সুগার গ্রহণ করা ঠিক নয়। এক ক্যান কোকাকোলায় ৯ কিউব পরিমাণ চিনি রয়েছে, যা ৩৭ গ্রামের মতো; অর্থাৎ দৈনিক একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের যতটুকু চিনি খাওয়া উচিত, তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ সুগার রয়েছে এক ক্যান কোকে।
● মিষ্টি দাঁতের ক্ষয় ডেকে আনে। ডেন্টাল ক্যারিজের জন্য মিষ্টি ভয়ানক শত্রু।
● চিনি হলো শরীরের শক্তির জোগানদাতা। অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ করলে তা সরাসরি শরীরে জমতে থাকে। ওজন হু হু করে বেড়ে যায়। অতিরিক্ত ওজন সঙ্গে নিয়ে আসে হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও বেশ কিছু ক্যানসার।
● মিষ্টি মোহ তৈরি করে। মিষ্টি মস্তিষ্কে আসক্তির জন্ম দেয়। এ কারণে মিষ্টি যেন একধরনের নেশা।
● মিষ্টি পেটে মেদ জমায়। চর্বি হিসেবে সঞ্চিত হতে থাকে লিভারে। ফ্যাটি লিভারের জন্য চর্বি যত না দায়ী, তার চেয়ে বেশি দায়ী মিষ্টি।
আমাদের দৈনন্দিন খাবারে কিন্তু চিনি বা মিষ্টি আছে। নানা ফলমূল, শাকসবজি কিংবা দুধে এ মিষ্টি রয়েছে। এসব খাবারে চিনির সঙ্গে অন্যান্য উপাদান, যেমন ফাইবার (আঁশ), প্রয়োজনীয় খনিজ লবণ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কিংবা প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে। এসব খাবারে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা খুব দ্রুত বেড়ে যায় না। তাই এগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। এগুলোকে ফ্রি সুগার বলা যাবে না।