বাতব্যথা এবং নানা আর্থ্রাইটিস বা জয়েন্টের প্রদাহজনিত সমস্যায় ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার গুরুত্ব অপরিসীম। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডাইলাইটিস, স্পন্ডাইলাইটিস অর্থোপ্যাথি ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদি রোগ সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য নয়। তবে ওষুধ, ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা, কিছু ফুড সাপ্লিমেন্ট, ব্যায়াম ও জীবনযাপনের পদ্ধতি পরিবর্তনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়।
এ ধরনের আর্থ্রাইটিস বা বাতরোগে আক্রান্ত রোগীর সন্ধি ব্যথার পাশাপাশি সন্ধির স্টিফনেস বা জমাট বাঁধার সমস্যা দেখা দেয়। আক্রান্ত জয়েন্টগুলো ঠিকভাবে নড়াচড়া করা যায় না।
বিশেষ করে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে হাত–পায়ের ছোট ছোট জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধিগুলো বাঁকা হয়ে যায়। অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডাইলাইটিস রোগে মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বক্রতা নষ্ট হয় এবং মেরুদণ্ডকে একটি দণ্ডের মতো শক্ত করে ফেলে। এতে রোগী মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক নড়াচড়া করতে পারে না।
অন্যদিকে অস্টিওআর্থ্রাইটিস একধরনের বয়সজনিত অস্থিসন্ধির ক্ষয়রোগ। এটি সাধারণত শরীরের বড় বড় জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির ভেতরের কার্টিলেজ বা তরুণাস্থি ক্ষয় করে। অস্থিসন্ধির তরল বা সাইনোভিয়াল ফ্লুইড কমে অস্থিসন্ধির গ্যাপ কমে যায়। এতে আক্রান্ত জয়েন্ট নাড়ানো কষ্ট হয়।
এসব রোগ থেকে সুস্থ থাকতে রোগীর সমন্বিত চিকিৎসা প্রয়োজন। ব্যথানাশক ওষুধ বা এনএসআইডি জাতীয় ওষুধ দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহার করা যায় না। করলে নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
যেমন লিভার, কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে বিকল করে দেয়। পেপটিক আলসার বা ডিওডেনাল আলসার হয়। তাই অল্প দিনের জন্য ব্যথানাশক সেবন করে এ ধরনের রোগে নির্দিষ্ট চিকিৎসা শুরু করা উচিত।
চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু ডিজিজ মডিফাইং ওষুধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা অস্থিসন্ধির প্রদাহ কমিয়ে জয়েন্টগুলোকে সচল রাখতে পারে।
ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা এই ধরনের রিউমাটোলজিক্যাল ডিজিজের পাশাপাশি বিভিন্ন মাস্কুলোস্কেলিটাল, নিউরোলজিক্যাল, কার্ডিওরেসপিরেটরি, গাইনোলজিক্যাল বিভিন্ন রোগে ব্যক্তিকে ব্যথামুক্ত স্বাভাবিক জীবনযাপনে সহায়তা করছে।
এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি