কারও কারও পায়ের দুর্গন্ধ পাশের জনের বিরক্তের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দুর্গন্ধ বয়ে বেড়ানোর কারণে বিব্রতও হন অনেকে। কিন্তু কেন পায়ে এমন দুর্গন্ধ হয়?
এ জন্য বেশ কিছু কারণ দায়ী, যার মধ্যে অন্যতম পায়ের ঘাম আর ব্যাকটেরিয়া। শীতের সময় জুতা-মোজা পরার প্রবণতা বেড়ে যায়। তাই শীতকালেই অধিকাংশ মানুষের পায়ে দুর্গন্ধ হয়। এ সময় রেক্সিন, প্লাস্টিক বা মোটা লেদারের তৈরি জুতা পরার কারণে পায়ে বাতাস চলাচল ব্যাহত হয়। একসময় বন্ধ পায়ে ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে দুর্গন্ধ। তবে শুধু মোটা মোজা বা ভারী জুতা থেকেই ঘাম হয়, তা নয়। অনেকের এমনিতেই ঘামের প্রবণতা বেশি, তাঁদের অল্পতেই পা ঘেমে দুর্গন্ধ হয়। আবার কিছু রোগ থেকেও পায়ের দুর্গন্ধ হতে পারে।
১. পাতলা লেদারের বা কাপড়ের তৈরি জুতা পরুন। সুতি কাপড়ের তৈরি মোজা ব্যবহার করুন।
২. ভারী জুতা, নাইলন বা পলিস্টারের তৈরি মোজা পরার কারণে পায়ে দুর্গন্ধ হয়। এসব জুতা ও মোজা পরলে পায়ের রক্ত চলাচলও বাধাগ্রস্ত করে। তাই এগুলো এড়িয়ে চলা ভালো।
৩. প্রতিদিন মোজা পরিবর্তন করুন। ব্যবহৃত মোজা ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। একই জুতা রোজ ব্যবহার না করতে পারলে আরও ভালো। সপ্তাহে অন্তত দুই দিন জুতা রোদে শুকিয়ে নিতে পারেন।
৪. মোজায় বা জুতার মধ্যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল পাউডার দেওয়া যেতে পারে। ট্যালকম পাউডার, বোরিক অ্যাসিড বা দুর্গন্ধনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।
৫. বাইরে থেকে বাড়ি ফিরে অ্যালকোহল ওয়াইপস দিয়ে পা পরিষ্কার করে নিতে পারেন।
৬. আধা চামচ এপসম সল্ট মেশানো পানিতে ২০ মিনিট পা চুবিয়ে রাখলেও দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি মেলে।
৭. নিয়ম মানার পরও যাঁদের পা বেশি ঘামে, তাঁরা পায়ে ড্রাই লোশন ব্যবহার করতে পারেন।
৮. পায়ের ত্বকের মরা চামড়া পরিষ্কার রাখুন। সময় মতো নখ কাটুন।
৯. কর্মস্থলে দীর্ঘ সময় যাঁরা ডেস্কে কাজ করেন, তাঁরা আনুষ্ঠানিক মিটিং ছাড়া অন্যান্য সময় স্যান্ডেল ব্যবহার করতে পারেন।
১০. অফিস থেকে বাসায় ফিরে জুতা খুলে পায়ে পর্যাপ্ত বাতাস লাগান। জুতাগুলোও এমন জায়গায় রাখুন যেন জুতার ভেতরে পর্যাপ্ত বাতাস প্রবেশ করতে পারে। কোনো কারণে জুতার ভেতরে ভিজে গেলে, তা না শুকিয়ে ব্যবহার করা উচিত নয়।
এসব নিয়ম মেনে চলার পরও পায়ের দুর্গন্ধ দূর না হলে অবশ্যই একজন চর্মরোগ–বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নেবেন।
ডা. হিমেল বিশ্বাস: আবাসিক চিকিৎসক, স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা