ইনডোর প্ল্যান্ট কেন স্বাস্থ্যের জন্য ভালো

যান্ত্রিক জীবনে একটুখানি প্রাণ, সতেজতা আর সবুজের হাতছানি তো আমরা সবাই চাই। সে কারণে শখ করে আমরা বাসার জন্য দু–চারটি ইনডোর প্ল্যান্ট কিনে থাকি। তবে আপনি কি জানেন, সবুজের ছোঁয়া আর সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি ইনডোর বা হাউস প্ল্যান্টগুলো স্বাস্থ্যের জন্যও দারুণ উপকারী! চলুন, জেনে নিই ইনডোর প্ল্যান্টের পাঁচটি স্বাস্থ্যবিষয়ক উপকারী দিক—
সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি ইনডোর প্ল্যান্টগুলো স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

১. বাতাসের মান ভালো করে: আজকাল দূষিত বাতাস থেকে পরিত্রাণের জন্য বায়োফিল্টার বা অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। অথচ গবেষণা বলছে, বাতাস বিশুদ্ধ করতে বাড়িতে কয়েকটা গাছ থাকাই যথেষ্ট। ব্যাম্বু পাম, ফার্ন, রাবার ট্রি, স্পাইডার প্ল্যান্ট—এই ইনডোর প্ল্যান্টগুলো বায়ু বিশুদ্ধকরণে খুব ভালো কাজ করে; এগুলো দূষিত বাতাসের ক্ষতিকর উপাদান দূর করে বাড়ির বায়ুকে করে সতেজ।


২. কমে চাপ আর উদ্বেগ: গবেষণায় দেখা যায়, যেসব মানুষ প্ল্যান্টের আশপাশে সময় কাটান, তাঁদের স্ট্রেস বা উদ্বেগজনিত সমস্যা কম থাকে। এমনকি যেসব অফিস ও ক্লাসরুমে গাছপালা থাকে, সেখানে লোকজন বেশি সৃজনশীল ও কর্মমুখী হয়।

প্ল্যান্টে খুব কম পরিমাণে স্ট্রেস হরমোন ‘কর্টিসোল’ থাকে, তাই এগুলো আরাম, প্রশান্তি ও শিথিলতাকে ত্বরিত করে। এই বিশেষ কারণে রোগীদের সুবিধার জন্য আজকাল অনেক হাসপাতাল বা সেবাদান কেন্দ্রে ইনডোর প্ল্যান্ট ইন্টেরিয়র ডিজাইন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

যেসব মানুষ গাছের আশপাশে সময় কাটান, তাঁদের স্ট্রেস বা উদ্বেগজনিত সমস্যা কম থাকে

৩. মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে: বাড়ির আশপাশ বা কর্নারে সবুজ প্রাণের উপস্থিতি আপনার মনকে করে ফুরফুরে। গবেষণা বলে, প্ল্যান্টের উপস্থিতিই আপনাকে ভালো বোধ করায়, কর্মদক্ষতা বাড়ায়, এমনকি স্মৃতিশক্তিও ধারালো করে; আজকাল যারা বিষণ্নতা বা ডিমেনশিয়ার মতো মানসিক রোগের সঙ্গে লড়াই করছেন, তাঁরা অনেকেই ‘হর্টিকালচারাল থেরাপি’ নিয়ে ভালো অনুভব করছেন।

মানসিক অবসাদ আর বিষণ্নতায় যখন কিছুই ভালো লাগে না, তখন নীরবে প্রকৃতির সান্নিধ্য খোঁজেন সবাই। গাছের যত্ন নেওয়া, অল্প স্বল্প পানি দেওয়া, ধুলা মোছা—এসবের মাধ্যমে আপনার প্রিয় গাছের বৃদ্ধির পাশাপাশি আপনার মনও কিন্তু স্বস্তি পায়! আর এর কারণ হিসেবে ধারণা করা হয়, গাছপালার ইতিবাচক প্রভাব মস্তিষ্ককেও ইতিবাচক সংকেত দেয়।

গাছের ইতিবাচক প্রভাব মস্তিষ্ককেও ইতিবাচক সংকেত দেয়

৪. বাড়ায় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা: ইনডোর প্ল্যান্টগুলোতে ফাইটোসাইড নামের একধরনের প্রাকৃতিক রাসায়নিক রয়েছে। যা রাসায়নিক ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংস করে। অর্থাৎ বাসাবাড়িতে ইনডোর প্ল্যান্ট থাকলে আপনার অসুস্থ হওয়ার সুযোগ কম।


৫. ভালো ঘুমের জন্য: সুস্থ জীবনের জন্য চাই পরিপূর্ণ ভালো ঘুম। বেডরুমে রাখা ইনডোর প্ল্যান্টগুলো কিন্তু দিনশেষে আপনার স্ট্রেস কমায় এবং মস্তিষ্ক শিথিল করতে সাহায্য করে। ল্যাভেন্ডার বা জেসমিন ধরনের সুবাসিত ফুলের গাছগুলো প্রাকৃতিক ঘুমের ওষুধ হিসেবে কাজ করে। তাই বলাই যায়, আরামের ঘুম ও বিশ্রামের জন্য ইনডোর প্ল্যান্ট খুব উপকারী।


স্বাস্থ্য সচেতনতায় নিজেকে ও পরিবারকে ভালো রাখতে যাঁরা সহজ ও প্রাকৃতিক উপায় খুঁজছেন, তাঁরা ইনডোর প্ল্যান্টকে তালিকার প্রথমে রাখতে পারেন।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে