মরিচ কি শুধুই খাবারের স্বাদ বাড়ায় বা ঝাল স্বাদ এনে দেয়? নাকি এরও আছে অতিপ্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ? ঠিক কতটুকু জানি আমরা?
চোখের সমস্যা দূর করে
কাঁচা মরিচে আছে ভিটামিন এ, যা রাতকানা নিরাময় এবং দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এতে আরও আছে ভিটামিন সি, যা চোখের জন্য ভালো।
ওজন কমায়
মরিচের ক্যাপাসিয়াসিন উপাদান তাপ উৎপাদন করে, যা দেহের বিপাক প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং স্বাদ নিয়ন্ত্রণ করে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
সর্দি–কাশিতে আরাম
সর্দি–কাশি হলে নাক বন্ধ হয়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, মরিচ নাক বন্ধ দূর করে।
মানসিক বিষাদ দূর
মরিচ এন্ডোরফিন ও সেরোটনিন নিঃসরণে করে, যা মানসিক অবসাদ দূর করে মনকে উৎফুল্ল রাখে। লাল মরিচের হিমোগ্লোবিন মস্তিষ্কের রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি করে।
হৃৎপিণ্ডের উপকার
মরিচের ভিটামিন কে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না বলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা অনেকাংশেই কমে যায়। এ ছাড়া মরিচের ক্যাপাসিয়াসিন ও ভিটামিন সি অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট গুণ হৃৎপিণ্ডকে অধিক কার্যকর রাখে। মরিচ রক্তচাপ ও রক্তে চর্বি কমাতেও উপকারী।
ব্যথানাশক
ক্যাপাসিয়াসিন নামক উপাদানের জন্য মরিচ ব্যথা দূর করে। এর অ্যান্টি–ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট গুণাবলি হাড়ের ব্যথা, মাথাব্যথা ও বাতের ব্যথায় উপকারী।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
মরিচের ক্যাপাসিয়াসিন দেহে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। ফলে যাঁরা ইনসুলিন নেন, তাঁদের ইনসুলিনের পরিমাণ কম লাগে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়।
রক্তস্বল্পতা দূর করে
লাল মরিচের হিমোগ্লোবিন রক্ত উৎপাদনে সাহায্য করে। মরিচে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে, যা আয়রন হজমের জন্য অতি প্রয়োজনীয় উপাদান; অর্থাৎ মরিচ আয়রনের অভাবজনিত রক্তস্বল্পতা দূর করতেও উপকারী।
কাঁচা মরিচ কেন স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?
কাঁচা ও লাল মরিচের পুষ্টিগুণ কাছাকাছি হলেও স্বাস্থ্যের জন্য কাঁচা মরিচ তুলনামূলক বেশি উপকারী। কারণ—
• পানির পরিমাণ বেশি
• কোনো ক্যালরি নেই
• অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট গুণাবলি বেশি
• অধিক বিটাক্যারটিন থাকে, যা পরে ভিটামিন এ তৈরি করে
• আফলাটক্সিন নামক ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান থাকে না
• কৃত্রিম রং দেওয়ার আশঙ্কা থাকে না
রোজ কতটুকু মরিচ খাবেন
রোজ ১২-১৫ গ্রাম মরিচ খেতে পারেন। পরিমিত পরিমাণে মরিচ খেলে পেট জ্বালাপোড়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়।
মরিচ কি গ্যাস্ট্রিক–আলসারের কারণ
অনেকের ধারণা, মরিচ গ্যাস্ট্রিক–আলসার সৃষ্টি করে। আদতে পরিমিত পরিমাণে খেলে এই ঝুঁকি থাকে না।
ডা. শিমু আক্তার, সহকারী অধ্যাপক, ফার্মাকোলজি অ্যান্ড থেরাপিউটিকস বিভাগ, জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ