সামান্য আঘাতেই কোনো বয়স্ক ব্যক্তি হাড় ভেঙে দিনের পর দিন বিছানায় পড়ে থাকেন। এমন দুঃসময়কে চোখের সামনে দেখে হয়তো অনেকেই আফসোস করেন। সামান্য আঘাতে হাড় ভেঙে যাওয়ার কারণ হলো হাড় দুর্বল হয়ে পড়া। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অনেকেরই এমনটা হয়। পুরুষের তুলনায় নারীর মধ্যে এমন প্রবণতা বেশি দেখা দেয়। তাই একদম ছোট্ট বয়স থেকেই কন্যাশিশুর প্রতি যত্নবান হতে হবে। বড় হওয়ার পরও যাতে নিজের প্রতি সে যত্নশীল থাকে, এভাবেই গড়ে তুলুন সন্তানকে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সন্তানের দেখভাল করতে গিয়ে নিজের সুস্থতার কথা ভুলেই বসেন অনেক মা। এটাও কিন্তু ঠিক নয়, বরং যত্ন চাই নিত্যদিন।
১. ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খান
দুধ ও দুধের তৈরি খাবার ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। নরম কাঁটাযুক্ত মাছ খেতে পারেন। ব্রকলি এবং গাঢ় সবুজ রঙের শাক থেকেও পাবেন পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম। আর খাবার থেকে পাওয়া ক্যালসিয়াম সঠিকভাবে শোষণ হওয়ার জন্য চাই ভিটামিন ডি, অর্থাৎ পর্যাপ্ত রোদের সংস্পর্শ।
২. হাড়ের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যায়াম করুন
অন্তত ৩০ মিনিট করে ব্যায়াম করুন, সপ্তাহের প্রতিটি দিনই ব্যায়াম করা ভালো। হাঁটা, দৌড়ানো ও সিঁড়ি বেয়ে ওঠার অভ্যাস রাখুন। এতে শরীরের নিচের অংশের হাড় মজবুত হবে। শরীরের যে অংশে ভর দিয়ে নিয়মিত ব্যায়াম করা হবে, সেই অংশের হাড়ই শক্তিশালী হয়ে উঠবে। তাই বাহুর হাড় মজবুত করতে সাহায্য করবে পুশ-আপ, ভারোত্তলন, বইঠা বাওয়া ও রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ডের (বাধা সৃষ্টিকারী ব্যান্ড) সাহায্যে ব্যায়াম। নৃত্যচর্চায়ও হাড় হয় সুগঠিত। সাইকেল চালানোর অভ্যাস থেকে থাকলেও সুগঠিত হাড়ের জন্য উল্লেখিত ব্যায়ামগুলো অভ্যাস করুন।
৩. খাদ্যতালিকা থেকে চিনি কমিয়ে দিন
কোমল পানীয়, মিষ্টান্ন, কুকি, বিস্কুট এবং প্রক্রিয়াজাত অন্যান্য খাবারের মাধ্যমে দেহে অতিরিক্ত চিনি প্রবেশ করে। অতিরিক্ত চিনি নানান দিক থেকেই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। হাড়েরও ক্ষতি করে এই অতিরিক্ত চিনি। এর প্রভাবে হাড় মজবুতকারী উপাদান (ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম) শরীর থেকে বেরিয়ে যায়; তা ছাড়া খাবারের মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম শোষণও বাধাগ্রস্ত হয়।
৪. অতিরিক্ত চা-কফি ও বাড়তি লবণ খাবেন না
অতিরিক্ত চা-কফি খেলে হাড়ের মধ্যকার ক্যালসিয়াম কমে গিয়ে হাড় দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। তা ছাড়া বাড়তি লবণও শরীরের ক্যালসিয়াম কমিয়ে দেয়। তাই পাতে বাড়তি লবণ এড়িয়ে চলুন। চিপসজাতীয় খাবার বর্জনীয়। লবণ দিয়ে সংরক্ষিত খাবার এবং পনিরও কম খেতে হবে।
৫. ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করুন
নিকোটিন এবং সিগারেটের অন্যান্য রাসায়নিক উপাদানের প্রভাবে হাড়ের প্রয়োজনীয় কোষ তৈরি বাধাগ্রস্ত হয়। তা ছাড়া এগুলোর প্রভাবে হাড়ে রক্তসঞ্চালনও কমে যায়। অ্যালকোহলের কারণেও হাড়ের কোষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।