দাবদাহে পুড়ছে দেশ। চলছে হিট অ্যালার্ট। এই দাবদাহ সবার জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ। পানিশূন্যতা, ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা, হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি এ সময় বেশি থাকে। গরমের জটিলতা প্রতিরোধে সঠিক খাবার ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় এমন খাবার খেতে হবে, যা শরীরে বাড়তি তাপ উৎপন্ন করবে না, সেই সঙ্গে শরীরে পানি ও ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করবে।
সারা দিনে ৫০০-৭০০ মিলিলিটার ফলের রস বা জুস পান করুন। হতে পারে সেটি তরমুজ, আনারস, পেঁপে, বেল, তেঁতুল, মাল্টার রস। জুসগুলোর ৭০-৮০ শতাংশ পানি, সঙ্গে ভিটামিন ও খনিজে ভরপুর। ফলের রস শরীরে পানির চাহিদা পূরণ করবে আর ভিটামিন ও খনিজ পেশির কর্মক্ষমতা অক্ষুণ্ন রাখবে।
পর্যাপ্ত পানি, ভিটামিন ও মিনারেলের উৎস এবং প্রোবায়োটিক হিসেবে টক দইয়ের লাচ্ছি হতে পারে হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে অন্যতম খাবার। টক দইয়ের প্রোবায়োটিক গুণাবলি শরীরে অধিক তাপমাত্রা উৎপন্ন হওয়াকে প্রশমিত করে।
পানির অন্যতম প্রধান কাজ শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করা। তাই এ সময়ে আপনাকে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি পানি পান করতে হবে।
অনেকে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করেন; যা মোটেও ঠিক নয়। ঠান্ডা পানি পান করলে প্রথমেই শরীরের তাপমাত্রা অনেক কমে আপনার বেশ ভালো লাগতে পারে। তবে অল্প সময় পরই গরমের অনুভূতি অনেক বেড়ে যাবে। তাই অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি ৫০ শতাংশ স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানির সঙ্গে মিশিয়ে পান করবেন।
শরীরের তাপমাত্রা ও খনিজের ভারসাম্য রক্ষায় চিকেন ভেজিটেবল স্যুপ হতে পারে একটি চমৎকার খাবার।
ভাজি-ভুনা খাবারের পরিবর্তে কম মসলাযুক্ত পাতলা ঝোলের তরকারি খাবেন। এতে শরীরে তাপ উৎপন্ন কম হবে; যা আপনাকে স্বস্তি দেবে। বেশি মসলাযুক্ত খাবার হজম করতে শরীরে বেশি সময় লাগে ও অধিক তাপ উৎপন্ন হয়। প্রোটিনের উৎস হিসেবে শিং, পুঁটি, ট্যাংরা, পাবদা—এসব মাছের পাতলা ঝোলের রান্না খাবেন। মাংস যতটা সম্ভব কম খাবেন।
● সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঘরে বা ছায়াযুক্ত জায়গায় থাকতে চেষ্টা করুন।
● পোশাক হিসেবে সাদা বা হালকা রঙের ঢিলেঢালা পোশাক পরবেন। কালো রঙের কাপড়ের তাপ শোষণের ক্ষমতা অনেক বেশি।
● বাইরে রোদচশমা ও সাদা রঙের ছাতা ব্যবহার করবেন।
● চা-কফি না খাওয়ার চেষ্টা করুন। খেলেও দিনে সর্বোচ্চ দুইবার লেবু দিয়ে রং চা খাবেন।
●প্রয়োজনে দিনে দু-তিনবার ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করুন।
মো. ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল