হাইপোথাইরয়েডিজম হলে রক্তশূন্যতা হয় বলে হাতের তালু, নখ ফ্যাকাশে দেখায়, নখ বেঁকে যেতে পারে, নখ ভঙ্গুর মনে হয়।
ত্বকের সুস্বাস্থ্যের সঙ্গে হরমোনের ভূমিকা অনেক। নানা ধরনের হরমোনের ওঠানামা ত্বকে নানা ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হলো থাইরয়েড হরমোন। অনেক সময় ত্বকের নানা সমস্যাই থাইরয়েড সমস্যার প্রধান লক্ষণ বা উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়। তাই জেনে নেওয়া ভালো ত্বকের কোনো ধরনের সমস্যা হলে থাইরয়েড পরীক্ষা করানো উচিত।
থাইরয়েড হরমোন শরীরের বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে বলে এর অভাবে অন্যান্য অঙ্গের মতো ত্বকেও দেখা দেয় নানা সমস্যা। এর মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত সমস্যাটি হলো শুষ্ক ত্বক।
হাইপোথাইরয়েড রোগীদের ত্বক শুষ্ক ও খসখসে হয়ে পড়ে, ফেটে যেতে পারে এবং চামড়া উঠতে পারে।
অনেকের অতিরিক্ত শুষ্কতার জন্য ত্বক চুলকায়।
চোখের নিচ ফোলা মনে হতে পারে।
এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আরও একটি বড় সমস্যা চুল পড়ে যাওয়া। অতিরিক্ত চুল পড়ে যাওয়া, চুল ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া, এমনকি ভ্রু পাতলা হয়ে যাওয়াও এ রোগের উপসর্গ।
কারও কারও ত্বক ফ্যাকাশে বা হলুদাভ মনে হতে পারে।
হাইপোথাইরয়েডিজম হলে রক্তশূন্যতা হয় বলে হাতের তালু, নখ ফ্যাকাশে দেখায়, নখ বেঁকে যেতে পারে, নখ ভঙ্গুর মনে হয়।
এ ধরনের রোগীদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যাও বেশি হয়। অটো ইমিউন থাইরয়েড রোগের সঙ্গে শ্বেতী বা ভিটিলিগো থাকা বিচিত্র নয়।
হাইপারথাইরয়েড রোগীরা অতিরিক্ত ঘামেন বলে ত্বক সব সময় ভেজা বা তৈলাক্ত থাকে।
করমর্দন করতে গেলে হাত স্যাঁতসেঁতে মনে হয়।
মুখও সব সময় ঘর্মাক্ত ও তৈলাক্ত মনে হয়।
কখনো কখনো থাইরয়েড অ্যাক্রোপেচি হলে হাতের ত্বক, সন্ধিতে নির্দিষ্ট পরিবর্তন দেখা যায়।
কারও পায়ের ত্বকে বিশেষ ধরনের পরিবর্তন দেখা দেয়। চুল পড়ার সমস্যা হতে পারে।
উল্লিখিত সমস্যাগুলো কারও মধ্যে দেখা দিলে থাইরয়েড হরমোন পরীক্ষা করানো উচিত।
থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারলে ত্বকের সমস্যাগুলো অনেকটাই কমে যায়।
কখনো কখনো ত্বকের জন্য আলাদা চিকিৎসা দরকার হয়।
তাই একজন চর্মরোগ–বিশেষজ্ঞের পাশাপাশি হরমোন–বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
অধ্যাপক মো. আসিফুজ্জামান, বিভাগীয় প্রধান, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ