শীতে ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার হার বাড়ে। প্রতিবছরই এমনটা দেখা যায়। এ কারণে এটাকে কখনো কখনো মৌসুমি ফ্লুও বলা হয়। এটি অত্যন্ত সংক্রামক রোগ, ছড়ায় ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস দিয়ে। ফ্লু আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণত দুই থেকে সাত দিনের মধ্যেই সেরে ওঠেন। তবে অল্প কিছু ক্ষেত্রে ফ্লু তীব্র আকার ধারণ করে। রোগীর উপসর্গের মাত্রা গুরুতর হতে থাকে। পরিস্থিতি এতই জটিল হয়ে উঠতে পারে যে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো লাগে। চিকিৎসার অভাবে এমন রোগী মারাও যেতে পারেন।
যাঁদের ক্ষেত্রে ফ্লু এতটা মারাত্মক আকার ধারণ করার ঝুঁকি রয়েছে, তাঁদের জন্য ফ্লু প্রতিরোধ ভীষণ জরুরি। আর সে কারণেই প্রয়োজন টিকা। ফ্লুর টিকা সেই ভাইরাস থেকে সুরক্ষা প্রদান করে।
৬৫ বছর বা এর চেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তি।
সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মী।
গর্ভবতী নারী।
বৃদ্ধ বা অক্ষম ব্যক্তির প্রধান সেবাদানকারী ব্যক্তি।
আবাসিক বা নার্সিং হোমে অবস্থানকারী ব্যক্তি।
দীর্ঘমেয়াদি রোগে (ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, হৃৎপিণ্ডের সমস্যা; ফুসফুসের সমস্যা বা শ্বাসকষ্ট, যেমন অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস, সিওপিডি, ব্রঙ্কিয়েকটেসিস; কিডনির রোগ; লিভারের রোগ প্রভৃতি) আক্রান্ত ব্যক্তি।
স্প্লীনের (প্লীহার) রোগে (যেমন সিকেল সেল রোগ) আক্রান্ত অথবা স্প্লীন কেটে ফেলতে হয়েছে, এমন ব্যক্তি।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস পায় এমন কোনো রোগে আক্রান্ত হলে কিংবা চিকিৎসার জন্য কোনো ওষুধ ব্যবহার করার প্রয়োজন হলে (যেমন স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ বা ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ)।
ছয় মাস অথবা এর চেয়ে বেশি বয়সী শিশু যারা বিভিন্ন রোগের কারণে ফ্লু হওয়ার ঝুঁকিতে আছে।
ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার আগেই প্রতিবছর হেমন্ত বা শীতের শুরুর দিকে ফ্লুর টিকা নেওয়া উচিত। এই টিকা আপনাকে ফ্লু মৌসুমের পুরো সময়জুড়ে সুরক্ষিত রাখবে। মনে রাখবেন, প্রতিবছরই এই টিকা গ্রহণ করা প্রয়োজন। কারণ, এই ভাইরাস প্রতিবছরই নিজের বৈশিষ্ট্য বদলাতে সক্ষম, যার ফলে আগের বছর নেওয়া টিকা আর কাজে আসে না।
*ডা. মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম: জুনিয়র কনসালট্যান্ট, রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা