আপনিও কি খাওয়ার পরে গ্যাসের ওষুধ খান?

অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ মূলত নিঃসৃত অ্যাসিড প্রশমিত করে। সেইসঙ্গে অ্যাসিড নিঃসরণ হ্রাস করে
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের ক্ষেত্রে প্রায় সবার মধ্যেই একটি অভ্যাস লক্ষ্য করা যায়। তা হলো অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে একটা গ্যাসের ওষুধ বা অ্যান্টি–আলসার ওষুধ সেবন। প্রশ্ন হলো, সব অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গেই কি গ্যাসের ওষুধ খেতে হবে? যদি না হয়, তাহলে কোন কোন অ্যান্টিবায়োটিক খেলে গ্যাসের ওষুধ খেতে হবে? চলুন জেনে নিই।

১. অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ মূলত নিঃসৃত অ্যাসিড প্রশমিত করে। সেইসঙ্গে অ্যাসিড নিঃসরণ হ্রাস করে। সুতরাং গ্যাসের ওষুধ বা অ্যান্টি–আলসার ওষুধ শুধু সে সব ওষুধের সঙ্গেই খেতে হবে, যা অ্যাসিড নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়।

২. যেসব ওষুধ সেবনের ফলে পেট ভরা ভরা লাগে, বুকের জ্বালাপোড়া বৃদ্ধি পায় বা বমি বমি ভাব বা ক্ষুধামান্দ্য বৃদ্ধি পায়, সেগুলোর সঙ্গেও মাঝেমধ্যে প্রয়োজনে খাওয়া যেতে পারে। এ কারণেই কোন কোন ওষুধের সঙ্গে সাময়িকভাবে গ্যাসের ওষুধ দেওয়া হয়। যেমন ব্যথার ওষুধ, স্টেরয়েড, হার্টের ওষুধ, রক্ত পাতলা করার ওষুধ, আয়রন ট্যাবলেট, কিছু অ্যান্টিবায়োটিক যেমনা টেট্রাসাইক্লিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন ইত্যাদি।

অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ কেন খাবারের আগে খেতে হবে?

খাবারের পরে অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ খেলে এর কার্যকারিতা ৫০ শতাংশ কমে যায়। তাই এটি খাবারের অন্তত আধঘণ্টা আগে খেতে হবে। একান্তই যদি খাওয়ার আগে ওষুধ খেতে মনে না থাকে, তাহলে খাওয়ার আধঘণ্টা পরে খাওয়া যেতে পারে। তবে তাতে কার্যকারিতা প্রায় অর্ধেক কমে যায়।


যত্রতত্র অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ সেবনের ফলে কী কী সম্যাসা হতে পারে?

১. পাকস্থলীর উপকারী ও প্রয়োজনীয় ব্যাক্টেরিয়া মারা যায়।

২. ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি হজমে সমস্যা হয়।

৩. অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধের প্রভাবে অন্য ওষুধের কার্যকারিতা হ্রাস পেতে পারে।

তাই অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ সেবনের ব্যাপারে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা পরিহার করে এই ওষুধের সঠিক ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে হবে।

লেখক: ডা. শিমু আক্তার, সহকারী অধ্যাপক, ফার্মাকোলজি অ্যান্ড থেরাপিউটিকস বিভাগ, জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ।