হঠাৎ নখ উল্টে গেলে যা করবেন

হঠাৎ করেই নখ উপড়ে গেলে তীব্র ব্যথা হয়
ছবি : প্রথম আলো

মানুষের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো হাত ও পায়ের নখ। নখের গোড়ায় রক্ত চলাচল আর স্নায়ু—দুটিই অনেক বেশি থাকে। তাই নখ উপড়ে গেলে তীব্র ব্যথা ও রক্তপাত হয়। এতে ঘাবড়ে না গিয়ে প্রথমে শুকনা কাপড় দিয়ে ক্ষতস্থান চেপে ধরে রাখতে হবে। বাসায় আইস প্যাক থাকলে, সেটা দিয়ে চেপে ধরে রাখলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ঠান্ডা জিনিসের স্পর্শে রক্তনালি সংকুচিত হয়, তাই রক্তপাত ও ব্যথা দুই–ই কমে যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায়। নখ যদি পুরোটা উঠে যায়, তাহলে কিছুদিন নিয়মিত ড্রেসিং করলে ক্ষতস্থান শুকিয়ে যাবে। আর যদি আধভাঙা নখ রয়ে যায়, তাহলে কোনো সার্জনকে দেখিয়ে চিকিৎসা নিলে ভালো হবে।

নখের নিচের চামড়ায় আঘাত পেলে নিয়মিত ড্রেসিং করতে হবে

কেন এমন হয়

আমাদের দেশের আবহাওয়া অনেক আর্দ্র। আর পায়ের যত্ন নেয় খুব কম মানুষ। ঠিকমতো নখ কাটার নিয়মও অনেকে জানেন না। ফলে যত্নের অভাবে অনেকের নখের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়ে। এ ছাড়া নখ বেশি বড় রাখলে ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা বেড়ে যায়। অনেক সময় আঘাত পেয়ে বা দুর্ঘটনায় নখ উল্টে যায় বা ভেঙে যায়।

ক্ষতস্থানের যত্ন কীভাবে করবেন

হাতের ভেতরের নখ ভেঙে গেলে নতুন করে গজাতে সময় লাগে ৬ মাস আর পায়ের নখ ১২ থেকে ১৮ মাস। নখের নিচের চামড়াকে বলা হয় নেইল বেড। এটি খুব সংবেদনশীল। তাই আঘাত পেলে বা অস্ত্রোপচারের পর প্রথম সপ্তাহে নেইল বেড ঢেকে রাখতে হবে। নিয়মিত ড্রেসিং করাতে হবে। ফার্মেসিতে মেডিটুলি বা সুপ্রাটুলি নামের একধরনের ড্রেসিং কিনতে পাওয়া যায়। সেটি মাপমতো কেটে ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রাখলে ভালো ফল পাওয়া যায়। না পাওয়া গেলে পরিষ্কার গজ পিসে ভেসলিন মেখে নখ ঢেকে রাখতে হবে।

গরম পানিতে এক টেবিল চামচ লবণ, এক চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে তাতে দুই পা ১৫ থেকে ২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে

প্রতিরোধের উপায়

পায়ের নখ ভালো রাখতে ও আর্দ্র আবহাওয়ায় নখ মজবুত রাখতে নিয়মিত পায়ের যত্ন নিতে হবে। এক গামলা হালকা গরম পানিতে এক টেবিল চামচ লবণ, এক চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে তাতে দুই পা ১৫ থেকে ২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে। এরপর পুরোনো পরিষ্কার টুথব্রাশ দিয়ে নখ ও আঙুলের ফাঁকে ব্রাশ করতে হবে। সাধারণ পানি দিয়ে পা ধুয়ে ফেলতে হবে। তারপর পায়ে মেখে নিতে হবে গ্লিসারিন ও গোলাপজলের মিশ্রণ। এতে যেমন নখ থাকবে মসৃণ, তেমন হবে মজবুত। এটি নিয়মিত করতে পারলে খুব ভালো। তবে কমপক্ষে সপ্তাহে একবার করতে পারলে পা ভালো থাকবে।

ডা. ইসমাত লিমা: সহকারী অধ্যাপক, কলোরেক্টাল সার্জারি, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল