জীবনের চাপ সামলে চলতে চলতে অনেকেই ‘টক্সিক’ আচরণ করে বসেন অন্যের প্রতি। চিৎকার-চেঁচামেচি, রাগারাগি, অশান্তির মতো ব্যাপার ঘটতে থাকে পারিবারিক কিংবা সামাজিক পরিসরে। এমনটা হলে আপনি ও আপনার কাছের মানুষেরা অনুভব করতে পারবেন আপনার টক্সিক হয়ে ওঠার বিষয়টি। তবে বিভিন্ন কারণে মানুষ নিজের প্রতিও টক্সিক হয়ে উঠতে পারে। ব্যাপারটি কিন্তু অনেকে উপলব্ধিই করতে পারেন না। জেনে নিন এমন কিছু লক্ষণ, যাতে আপনি বুঝতে পারবেন, আপনি নিজের প্রতি টক্সিক কি না। এসব লক্ষণের কোনোটি যদি আপনার মধ্যে থেকে থাকে, তবে নিজেকে নতুনভাবে ভালোবাসুন আজ থেকেই।
নিজের সঙ্গে নেতিবাচক কথোপকথন
নিজের সঙ্গে অনেকেই কথা বলেন। নিজের ভাবনার ভেতরেই নিজের বৈশিষ্ট্য বা কৃতকর্ম নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও করা হয়। কিন্তু আপনি যদি ক্রমাগত কেবল নিজের নেতিবাচক দিক নিয়েই ভাবেন কিংবা নিজের সঙ্গে কেবল নেতিবাচক কথাই বলেন, তাহলে বুঝতে হবে, আপনি নিজের প্রতি টক্সিক। ক্রমাগত আত্মসমালোচনা করা, নিজেকে ছোট করে কথা বলা এবং নিজের প্রতি সন্দেহ পোষণ করাটাও নেতিবাচক আত্মকথনের অংশ।
নিজের প্রতি যত্নের অভাব
নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের বৈশিষ্ট্য। নিজের স্বাভাবিক খেয়ালটুকু না রাখা কিংবা নিজের ভালো লাগার কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার অর্থই হলো আপনি নিজের যত্ন নিচ্ছেন না। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চা, এমনকি পর্যাপ্ত বিশ্রামও কিন্তু নিজের যত্নের অংশ।
নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া
আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব—সবার থেকেই নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া নিজের প্রতি টক্সিক হয়ে যাওয়ার আরেকটি লক্ষণ। এমন অবস্থায় কিন্তু মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ার ঝুঁকি আরও বাড়ে।
ব্যক্তিগত সীমারেখা নিশ্চিত করতে না পারা
অনেকে আবার অন্যের সঙ্গে মেলামেশা করা পরও নিজের প্রতি টক্সিক। এ ক্ষেত্রে টক্সিক হওয়ার লক্ষণটি হলো ব্যক্তিগত সীমারেখা টানতে না পারা। অন্যের সব চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে নিজেকে চাপের মুখে ফেলা কিংবা কাউকে ‘না’ বলতে না পারার অর্থও কিন্তু অনেক সময় এটাই দাঁড়ায় যে আপনি নিজের সীমা আলাদা করতে পারছেন না।
নিখুঁত হতে চাওয়া
কথায় বলে, মানুষ মাত্রই ভুল। বাস্তবিক অর্থেই কিন্তু নিখুঁত মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তাই বুঝতেই পারছেন, নিজের দোষত্রুটির জন্য নিজেকে ক্ষমা না করা কিংবা সাফল্যের মধ্যেও নিজের ভুল খুঁজে বের করা কোনো স্বাভাবিক ব্যাপার নয়।
ব্যর্থতার ভয়
জীবনে সব কাজে সফল হতে হবে—এমন সংকল্প রাখাও কিন্তু স্বাভাবিক নয়। জীবনে চড়াই–উতরাই আসবেই। সব পরিস্থিতিই শেষমেশ মেনে নিতে হয়। ব্যর্থতার ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে রাখাও একটি অস্বাভাবিকতা।
নিজের ক্ষতি করা
মানুষ নানাভাবেই নিজের ক্ষতি করেন। যেমন ধরুন, কেউ নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এতে কিন্তু তিনি নিজেই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ধূমপানে আসক্তির ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া