কয়েক দিন পরেই পবিত্র ঈদ। ছুটিতে আনন্দে মেতে থাকবেন সবাই। এই ছুটিতে অনেকে, বিশেষ করে শহরবাসী গ্রামের বাড়িতে যাবেন। সবাই যেন এই ছুটিতে সুস্থ থাকেন, তার জন্য সতর্ক থাকতে হবে। তাই ছোটখাটো অসুস্থতা বা দুর্ঘটনায় যাতে প্রাথমিক চিকিৎসা বাড়িতেই নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
কী কী সমস্যা হতে পারে
আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে ঠান্ডা-কাশির প্রকোপ বেড়েছে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা-কাশি অধিক সমাগমে দ্রুত ছড়ায়। তাই এটি বেশি মাত্রায় হতে পারে। পাশাপাশি বেশি খাবার গ্রহণের কারণে ডায়রিয়া, ফুড পয়জনিং ও বদহজম হয়ে থাকে। এ ছাড়া হালকা আঘাত, কাটাছেঁড়া, হাত-পা ছিলে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে শিশুদের। যাত্রাপথে অনেকের মাথা ঘোরা বা বমি ভাব হয়, যেটাকে বলে মোশন সিকনেস।
যেহেতু ডায়রিয়া, ফুড পয়জনিং ও বদহজম বেশি হতে পারে, সে কারণে খাদ্য গ্রহণের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। বাসি বা গুরুপাক খাবার কম খেতে হবে। অনেকে যাত্রাপথে রাস্তার খাবার খেয়ে অসুস্থ হন। সেগুলো খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। যাত্রাপথে শুকনা খাবার নিয়ে যাওয়া ভালো। শিশুদের খাবার সঙ্গে করে নিয়ে নিন। খাওয়ানোর আগে গরমে সেটা ঠিক আছে কি না, দেখে নিন।
বিশুদ্ধ ও ফোটানো পানি পান করতে হবে। সঙ্গে স্যালাইন রাখা যেতে পারে। ডায়রিয়া হলে স্যালাইন খেতে হবে।
ঠান্ডা-কাশি, জ্বরের জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন ও প্যারাসিটামল সঙ্গে রাখুন।
কাটাছেঁড়া ও আঘাতের জন্য ফার্স্ট এইড বক্স রাখা যেতে পারে। যার মধ্যে গজ-ব্যান্ডেজ, ব্যান্ড–এইড ও অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম থাকবে। শিশুদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আগুন বা পানির কাছে যেন না যায়।
খাদ্য হজমজনিত বা গ্যাসের সমস্যা হতে পারে অনেকের। সে কারণে সঙ্গে গ্যাসের ওষুধ বা অ্যান্টাসিড–জাতীয় ওষুধ রাখা যেতে পারে।
যাঁদের মোশন সিকনেস আছে বা যাত্রাপথে বমি ভাব হয়, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ; যেমন মাথা ঘোরা বা বমির ওষুধ রাখতে পারেন।
অন্তঃসত্ত্বা নারীদের এই সময়ে খাবার থেকে যাতায়াত—সবকিছুতেই সতর্ক থাকা উচিত।
যাঁরা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা অন্যান্য সমস্যার জন্য বিভিন্ন ওষুধ নিয়মিত সেবন করেন, তাঁদের উচিত পর্যাপ্ত ওষুধ আগে থেকেই সংরক্ষণ করে রাখা।
ঈদের আনন্দের মাঝে এ রকম ছোটখাটো সমস্যা হতেই পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এগুলো সহজে সমাধানযোগ্য। তবে মনে রাখতে হবে যে এসব প্রাথমিক ব্যবস্থা গ্রহণের পরও কেউ অসুস্থ বোধ করলে, বিলম্ব না করে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। গাফিলতি করা যাবে না।
ডা. সাইফ হোসেন খান, মেডিসিন কনসালট্যান্ট, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধানমন্ডি।